বিমান বাহিনীর অনুষ্ঠানে মঞ্চে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন জো বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে বিমান বাহিনী একাডেমির এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় মঞ্চে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার (১জুন) এ ঘটনাটি ঘটে। খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর।
তবে মঞ্চে পড়ে গেলেও গুরুতর কোনো ব্যথা পাননি ৮০ বছর বয়সী জো বাইডেন। তার পড়ে যাওয়ার ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় বাইডেন পড়ে যাওয়ার পর হাত দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়া ঠেকান এবং নিজেই এক হাতে ভর দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি একা উঠতে না পারায় বিমান বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা ও সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা এসে তাকে উঠে দাঁড়াতে সহায়তা করে। এরপর কারো সাহায্য ছাড়াই নিজের আসনে গিয়ে বসেন বাইডেন।
পড়ে যাওয়ার ঠিক আগেই বিমান বাহিনীর গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে প্রাণবন্ত এক বক্তৃতা দিয়েছেন বাইডেন। হোয়াইট হাউজের কমিউকেশনস ডিরেক্টর বেন লাবোল্ট বলেছেন, "তিনি (বাইডেন) ঠিক আছেন। তিনি যখন করমর্দন করছিলেন, মঞ্চে একপাশে একটা ছোট বালির ব্যাগ ছিল।" সেটাতে হোঁচট খেয়েই বাইডেন পড়ে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু বাইডেন একাই নন, প্রেসিডেন্টদের এ ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড ক্ষমতায় থাকাকালীন একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছেন, যার ফলে কমেডিয়ানরা প্রায়ই তাকে নিয়ে মজা করতো।
আরেক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে তার ৭৪তম জন্মদিনের একদিন আগে ওয়েস্ট পয়েন্টে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে মঞ্চ থেকে নামার সময় খুবই ধীরে হাঁটছিলেন এবং টলছিলেন বলে মনে হয়েছিল। এর ফলে অনলাইনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছিল।
তবে বলে রাখা ভালো, জো বাইডেন আমেরিকার সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট; সেই সঙ্গে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোট চাইছেন। কিন্তু গতকালের অনুষ্ঠানে পড়ে যাওয়ায় আবারও প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে হোয়াইট হাউজের চিকিৎসক স্বীকার করেছেন যে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাইডেনের চলাফেরার গতি অনেকটাই ধীর হয়ে গিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির দিকেও ওয়ারশ থেকে ফেরার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান 'এয়ার ফোর্স ওয়ান' এর সিঁড়িতে হোঁচট খেয়েছিলেন বাইডেন।
এদিকে রিপাবলিকানরা বাইডেনের পড়ে যাওয়ার ঘটনাকে একটি প্রমাণ হিসেবে দেখাচ্ছেন যে তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ফিট নন; এবং অনলাইনে নিজেদের বক্তব্যকে প্রমাণ করতে বাইডেনের পড়ে যাওয়ার ভিডিও ছবি শেয়ার করেছেন।
কিন্তু বাইডেনের স্টাফ সদস্যসহ আরও অনেক ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করেছেন, বাইডেন এখনও যথেষ্ট ফিট আছেন এবং প্রায়ই সারা দিনব্যাপী কাজ করার মতো শক্তিও তার এখনও আছে। তারা আরও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিদিনই ব্যায়াম করেন যাতে তার ওজন বেড়ে না যায়।
তবে বাইডেন নিজেই বলেছেন যে তার বয়স নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা আসলেই যুক্তিসংগত। এমনকি গতকালের অনুষ্ঠানে পড়ে যাওয়ার আগমুহূর্তেও গ্র্যাজুয়েটদের সামনে নিজের বয়স নিয়ে একটি জোক করেন তিনি।
বাইডেন বলেন, "৩০০ বছর আগে যখন আমি হাইস্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলাম, তখন আমি নেভাল একাডেমিতে আবেদন করেছিলাম।" তার এই কথায় হাসির রোল ওঠে।
জো বাইডেন কলোরাডো থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পর হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জ্যঁ-পিয়ের রিপোর্টারদের বলেছেন, বাইডেন 'পুরোপুরি ভালো আছেন'।