জাপানে ভূমিকম্পে বিনামূল্যে খাবার দেবে ভেন্ডিং মেশিন!
দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত জাপান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বহুমুখী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভেন্ডিং মেশিনকেও যুক্ত করেছে। এখন থেকে শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প কিংবা টাইফুনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিনামূল্যে খাবার সরবারাহ করবে দেশটির নির্দিষ্ট কিছু ভেন্ডিং মেশিন। খবর দ্য গার্ডিয়ান-এর।
এমন দুটি ভেন্ডিং মেশিন দেশটির পশ্চিম উপকূলীয় শহর একোতে স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরটি আগামী কয়েক দশকের মধ্যে শক্তিশালী ভুমিকম্পের তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মূলত আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা ভবনগুলোর পাশে এসব ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হচ্ছে। স্থাপনকৃত প্রতিটি ভেন্ডিং মেশিনে বোতল বা ক্যান আকারে ৩০০টি কোমল পানীয় রাখা যাবে। এছাড়াও এতে ১৫০টি ইমারজেন্সি খাবারের আইটেম ও পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যাবে।
দৈনিক মাইনিছি শিম্বুনের তথ্যমতে, জাপানের সর্বোচ্চ ৭ রেঞ্জের ভিন্নধর্মী যে ভূমিকম্পের স্কেল, সে স্কেলের পাঁচ কিংবা তারও বেশি মাত্রায় ভূমিকম্প হলে ভেন্ডিং মেশিনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে। তবে দুর্যোগকালীন সময় ব্যতীত অন্য স্বাভাবিক সময়ে অবশ্যই অর্থ পরিশোধ করে মেশিনটি থেকে পণ্য কিনতে হবে।
ভেন্ডিং মেশিনগুলো তৈরি করেছে 'আর্থ কর্প' নামের একটি কোম্পানি যাদের একো শহরেই ফ্যাক্টরি রয়েছে। কোম্পানিটি জানায়, এ ধরনের মেশিনের ব্যবহার জাপানেই প্রথম।
গত কয়েক বছরে দেশটিতে শক্তিশালী টাইফুন আঘাত হানে। এর ফলে দেখা দেয় বৃহৎ আকারে বন্যা ও ভুমিধস।
আর্থ কর্প কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেন, "আমরা পুরো দেশজুড়েই ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করতে চাই।"
একো শহরের এক কর্মকর্তা বলেন, "আশা করি, খাবারের এ মজুদ আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।"
অন্যদিকে চলতি বছরের শুরুর দিকে টোকিওর একটি পার্কে রেডিও সুবিধাসহ একটি ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। রেডিওটি যেকোনো দুর্যোগকালীন সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমারজেন্সি সম্প্রচার করবে।
জাপানের ভূমিকম্প স্কেলের পাঁচ কিংবা তার চেয়েও বেশি মাত্রার ভুমিকম্পের ক্ষেত্রে রেডিওটি সক্রিয় হয়ে যাবে এবং স্থানীয় কমিউনিটি রেডিও থেকে উদ্ধার সম্পর্কিত কিংবা অন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্প্রচার করবে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে নানকাই শহর বরাবর আগামী ২০ বছরের মধ্যে খুবই শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। রিখটার স্কেলের ৭ মাত্রার চেয়েও বেশি এই ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভবনা শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ।
আর অঞ্চলটিতে আগামী ৪০ বছরের মধ্যে ঠিক একই (রিখটার স্কেলে ৭ এর চেয়েও বেশি) মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে শতকরা ৯০ ভাগ।