তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ক্ষমতা ভাগাভাগির নীতিতে ‘একমত’ নওয়াজ-জারদারি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচনে জয়ী হলে পরবর্তীতে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নিয়ে দেশ পরিচালনাসহ বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর শীর্ষ নেতারা। সংযুক্ত আরব-আমিরাতের দুবাইয়ে পিএমএল-এন'র সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে পিপিপি নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি ও তার বাবা আসিফ আলী জারদারিসহ অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে পিএমএল-এন ও পিপিপি নেতারা সপ্তাহজুড়ে একাধিকবার মিলিত হয়েছেন। বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি, পিএমএল-এন'র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ শরিফ এবং আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারারও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। কারণ সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে নতুন একটি আইন পাস হয়েছে, যেখানে একজন পার্লামেন্টারিয়ানের শাস্তির মেয়াদ, অর্থাৎ তাকে অযোগ্য ঘোষণার মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর নির্ধারণ করা হয়। ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আবারও রাজনীতিতে ফেরার পথ সুগম হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ধারণা করা হচ্ছে, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৪ আগস্ট পাকিস্তানে ফিরতে পারেন নওয়াজ।
জানা যায়, বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে কেবল নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ইস্যুতেই ভিন্নমত দেখা দিয়েছিল দুই পক্ষের মধ্যে।
অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে পিএমএল-এন নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি; অন্যদিকে, পিপিপি নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন চায় বলে স্পষ্ট করেছে।
শুক্রবার (৩০ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, তার সরকারের মেয়াদ আগামী মাসে শেষ হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।
নির্বাচনে যেই জয়ী হোক, তাকে জনগণের সেবা করতে হবে এবং দেশকে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কবল থেকে বের করে আনতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে, গণমাধ্যম ডনকে একটি সূত্র জানিয়েছিল, বৈঠকে ইমরান খানের পিটিআইয়ের ভবিষ্যত নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নির্বাচনে পিটিআইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, নাকি পুরো প্রক্রিয়া থেকে দলটিকে একেবারেই বাদ দেওয়া হবে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বৈঠকে।
তবে পিপিপি'র এক নেতা বলেছেন, "৯ মে এর আগে পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে কৌশল নিয়ে উভয় পক্ষ সম্পূর্ণ একমত ছিল, কিন্তু এখন যেহেতু ইমরান খান আর আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নন, অন্তত পিডিএমের দৃষ্টিতে, তাই উভয় পক্ষই এখন তাদের নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সাবধানতার সাথে এগোচ্ছে।"