পাঞ্জাবের বন্যায় ৩৫ বছর পর মা-ছেলের পুনর্মিলন
পারিবারিক এক সমস্যার কারণে ৩৫ বছর আগে দুই বছর বয়সী জগজিৎ সিংকে মা-এর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। জগজিৎ সিং জানতেন তার মা মারা গেছে। তবে ভারতের পাঞ্জাবের সাম্প্রতিক বন্যা নাটকীয়ভাবে মা-ছেলের পুনর্মিলন ঘটিয়েছে।
ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন
মাত্র দুই বছর বয়সে বাবাকে হারান জগজিৎ সিং। বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা পুনরায় বিয়ে করেন। জগজিৎ সিং বড় হন দাদা-দাদির কাছে। জগজিত সিংকে তার দাদা-দাদি বলেছিলেন, এক দুর্ঘটনায় তার বাবা-মা মারা গেছেন।
ভজন গায়ক
বড় হয়ে ভজন সংগীত গায়ক হয়ে ওঠেন জগহজৎ সিং। এর মধ্যে পাঞ্জাবের সাম্প্রতিক বন্যার সময় উদ্ধারকাজের জন্য পাটিয়ালায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ কথা জানতে পেরে জগজিৎ সিংয়ের ফুফু তাকে জানান, তার মাতামহরা পাটিয়ালার বোহরপুরে থাকেন। এসময় জগজিৎ সিদ্ধান্ত নেন তিনি বোহরপুর গ্রামে যাবেন।
মাতামহের বাড়ি শনাক্তকরণ
বোহরপুর গ্রামে গিয়ে মানুষের কাছে নিজের মা এবং নানা-নানি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা শুরু করেন জগজিৎ। এসময় তাকের একটি বাড়ি দেখিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান, খাটে এক বৃদ্ধা ঘুমাচ্ছে। তিনি ছিলেন জগজিৎ সিং-এর নানি। এসময় জগজিৎ সিং তাকে নানা কিছু জিজ্ঞেস করা শুরু করেন। সবকিছু শুনার পর জগজিৎ সিং কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, তিনিই সে ছেলে যে তার মায়ের কাছ থেকে এত বছর বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিলেন।
আবেগঘন মুহূর্ত
জগজিৎ সিং জানান, তারা দাদা-দাদি বলেছিলেন যে তার নানা-নানি বেঁচে আছে। কিন্তু সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলেন না। তাই তিনি প্রকৃত সত্য আসলে কখনোই জানতে পারেননি। আর ২০১৪ সাল নাগাদ ঘটনা সম্পর্কে অবগত প্রায় সবাই মারা গিয়েছিলেন। বন্যার সময় আকস্মিকভাবে তার ফুফু বোহরপুরের কথা উল্লেখ করেছিলেন। আর এতেই নিজের মাকে ফিরে পান জগজিৎ।
নানির কাছ থেকে ঠিকানা জেনে জগজিৎ সিং তার মাকে খুঁজে বের করেন। তার পরিবারের সাথেও পরিচয় করাতে নিয়ে আসেন। ৩৫ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাতের মূহুর্ত ক্যামেরায় বন্দী করা হয়। তা ফেসবুকেও প্রচার করা হয়। এতে দুজনকেই চোখে আনন্দের অশ্রু নিয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়।