গাজায় জিম্মি চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও কাতারের সঙ্গে আলোচনা করবেন সিআইএ প্রধান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা নতুন করে গাজা জিম্মি চুক্তি এবং সাময়িক যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে কাতারের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস এবং ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এ সপ্তাহে ইউরোপে কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া মিশরের গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামেল আলোচনায় অংশ নেবেন বলে দ্বিতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য বার্নস ইসরায়েলি ও কাতারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ইউরোপ সফর করবেন বলেও মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে ১,২০০ জনেরও বেশি হতাহত হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। ওই হামলায় ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বাইডেন প্রশাসন এই জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রধানরা এর আগে নভেম্বরে একটি স্বল্পকালীন যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করতে কাতার ও মিশরীয় কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বাইডেনকে বহনকারী এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে ভ্রমণরত সাংবাদিকদের বলেন, "বার্নস এ জিম্মি চুক্তিতে জড়িত ছিলেন এবং আরেকটি চুক্তি বাস্তবায়নে আমাদের সহায়তা করার চেষ্টা করছিলেন।"
ওয়াশিংটন পোস্ট এমন খবর প্রকাশ করলেও সিআইএ পরিচালকের ভ্রমণসূচি প্রকাশ করার নীতি না থাকায়, সংস্থাটি বৈঠকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
এদিকে, মার্কিন মিত্র ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছে। ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলায় গাজার বেশিরভাগ অংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৫, ৭০০ লোক নিহত হয়েছে।
তৃতীয় আরেকটি সূত্রের মতে, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির সময়কালের প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে ধীরে ধীরে মুক্তি দেওয়া হবে। বেসামরিক নারী ও শিশুদের দিয়ে জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এরপর বেসামরিক পুরুষ, নারী সেনা ও হামাসের হাতে অপহৃত হয়ে নিহত জিম্মিদের দেহাবশেষ মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে এই পরিকল্পনার সাথে হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবের তীব্র বৈপরীত্য থাকায় সমঝোতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। হামাস যুদ্ধ বন্ধ, ভবিষ্যতে যেকোনো সংঘাত রোধে আন্তর্জাতিক মহলের নিশ্চয়তা এবং ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িতসহ ইসরায়েলের হাতে আটক সব বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
আর ওয়াশিংটনের সমর্থন পাওয়া ইসরায়েল বরাবরই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে আসছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত রোববার বলেছেন, হামাসের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
সপ্তাহান্তে আলোচনার পরে, প্রধানমন্ত্রী আল থানি আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, আগামী সোমবার আটলান্টিক কাউন্সিলে তার বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে বলে থিংকট্যাংকের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।