২ বছরের মধ্যে আকাশে ফ্লাইং ট্যাক্সি উড়তে দেখা যাবে!
আকাশে ফ্লাইং ট্যাক্সি ওড়াবে যুক্তরাজ্য। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৬ সালেই দেশটি প্রথমারের মতো আকাশে ফ্লাইং ট্যাক্সি ওড়াতে চায়। আর তার ঠিক দুই বছর পর এটিকে আকাশের একটি নিয়মিত দৃশ্যে পরিণত করার পরিকল্পনাও রয়েছে দেশটির। খবর বিবিসির।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের দ্য ফিউচার অব ফ্লাইট অ্যাকশন প্ল্যানে এও বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে আকাশে প্রথমবারের মতো পাইলট বা চালকবিহীন ফ্লাইং ট্যাক্সিও উড়তে দেখা যাবে।
এসব ট্যাক্সির মডেলেও থাকবে ভিন্নতা। তবে বেশিরভাগ ট্যাক্সিই দেখতে আগামী দিনের হেলিকপ্টারগুলোর মতো হবে। এসব ট্যাক্সিতে সাধারণত ৫ জন আরোহী চড়তে পারবেন।
আপাতত ধারণা করা হচ্ছে, ফ্লাইং ট্যাক্সি হেলিকপ্টারের বিকল্প হিসেবে পরিবহন ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র একটি ধারা হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বর্তমানে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিঠি পাঠানো ও পলাতক আসামিদের অবস্থান জানার কাজে কিছু চালকবিহীন ড্রোনের ব্যবহার দেখা যায়। যদিও এ ব্যবহারগুলো এখনও প্রাথমিক পর্যায়েরই। পরিকল্পনা অনুযায়ী- ড্রোনের সাহায্যে কোনো কিছু সরবরাহের কাজটিও ২০২৭ সালের মধ্যে সাধারণ একটি বিষয়ে পরিণত হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লাইং ট্যাক্সি ওড়ানোর কাজটি খুব সহজ নয়। কারণ, এক্ষেত্রে অবকাঠামোগত ও জনগণের গ্রহণযোগ্যতার মতো কিছু বাধা রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে আগে সেসব বাধা কাটিয়ে উঠতে হবে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসির ড্রোন বিষয়ক প্রধান ক্রেইগ রবার্টস বলেন, আকাশে ট্যাক্সি ওড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো অবকাঠামোগত এবং এ বিষয়ে মানুষের বোধ বা ধারণা।
২০২৬ সালের মধ্যে ফ্লাইং ট্যাক্সি চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, 'এটি চ্যালেঞ্জের হলেও সম্ভব।'
এ বিষয়ে সরকারি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইং ট্যাক্সি চালু হলে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল থেকে ৭৪.৫ মাইল দূরে অবস্থিত লিডসে যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৬ মিনিট, যেখানে সাধারণত গাড়িতে যেতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগে। এই ফ্লাইং ট্যাক্সি হয়ে উঠতে পারে হেলিকপ্টারের বিকল্প।
এসব ট্যাক্সি কোথায় উড্ডয়ন ও অবতরণ করবে?
ফ্লাইং ট্যাক্সির জন্য যুক্তরাজ্যে নতুন করে অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন হবে। যেমন, ড্রোনের জন্য 'মিনি এয়ারপোর্ট' তৈরি করা।
২০২২ সালে সেন্ট্রাল কভেন্ট্রির কাছে একটি গাড়ি পার্কে চার সপ্তাহের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে একটি মিনি এয়ারপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। এর পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আর কোনো মিনি এয়ারপোর্ট তৈরি করা হয়নি।
আরবান এয়ার পোর্টের প্রধান নির্বাহী আন্দ্রে উ বলেন, ট্রান্সপোর্ট হাবগুলো নগর কেন্দ্রগুলোতে হওয়া উচিত। তবে যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত সে ধরনের 'অবকাঠামো নির্মাণে যথেষ্ট বিনিয়োগ হয়নি'। এ কারণে তিনি ২০২৮ সালের মধ্যে আকাশে ট্যাক্সি ওড়া নিয়মিত দৃশ্যে পরিণত করাকে অনেকটাই উচ্চাভিলাষী বলে মনে করেন।
তবে ফ্লাইং ট্যাক্সির জন্য চলতি বছরই প্রথম ভার্টিপোর্ট [খাড়াখাড়িভাবে উড়তে পারে এমন যানের (যেমন- হেলিকপ্টার) উড্ডয়ন ও অবতরণের জায়গা] চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক