সাঁতার কেটে, নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে অ্যাসাঞ্জের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পরিকল্পনা
দীর্ঘ ১৪ বছর পর বদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত হয়ে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরেছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে এবার তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন বলে প্রত্যাশা তার স্ত্রীর।
স্ত্রী স্টেলা বলেন, "অ্যাসাঞ্জ ১৪ বছর পর প্রথমবারের মতো মুক্ত জীবনে ফিরে এসেছেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রতিদিন সাগরে সাঁতার কাটার পরিকল্পনা করছেন। একইসাথে তিনি নিজের বিছানায় ঘুমাতে চান, ভালো খাবার খেতে চান। স্বাধীনতা উপভোগ করতে চান।"
এর আগে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মার্কিন আদালতে গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ স্বীকারের চুক্তিতে পৌঁছান অ্যাসাঞ্জ। পরে যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের একটি আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এরপর চুক্তি অনুযায়ী অভিযোগ স্বীকারও করে নেন অ্যাসাঞ্জ। পরবর্তীতে ক্যানবেরা বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয়।
এসময় বিমানবন্দরেই এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা বলেন, "মুক্ত হয়ে নিজেকে ফিরে পেতে এবং স্বাধীনতায় অভ্যস্ত হতে জুলিয়ানের কিছুটা সময় লাগবে।" এক্ষেত্রে তার স্বামীকে বিশ্রাম নিয়ে সুস্থ হওয়ার সুযোগ দিতে তিনি জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করেন।
২০২২ সালে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে বিয়ে করেন জুলিয়ান-স্টেলা দম্পতি। একসঙ্গে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। স্ত্রী জানান, "সন্তানেরা ওদের বাবা বাড়িতে আসছেন শুনে বেশ উচ্ছ্বাসিত হয়েছে।"
৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মার্কিন জাতীয় প্রতিরক্ষা বিভাগের গোপন তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছিল, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের যেসব গোপন তথ্য উইকিলিকস প্রকাশ করেছে, তা মানুষের জীবন বিপন্ন করার জন্য দায়ী।
এ অভিযোগে গত পাঁচ বছর ব্রিটিশ কারাগারে কাটিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। এই পুরোটা সময়জুড়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির অংশীদার সিবিএস আগেই জানিয়েছিল, চুক্তি মোতাবেক দোষ স্বীকারের পর অ্যাসাঞ্জকে আর মার্কিন কারাগারে সময় কাটাতে হবে না। কারণ এই অভিযোগে ইতোমধ্যেই তিনি লন্ডনের কারাগারে ৫ বছর বন্দি থেকেছেন।
এই ৫ বছর কারাবন্দি থাকার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনায় নিয়ে, দোষ স্বীকারের পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান