যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি নারী মন্ত্রী স্থান পাবেন কিয়ার স্টারমারের মন্ত্রিসভায়
ব্রিটেনের রাজা ও রাষ্ট্রপ্রধান তৃতীয় চার্লস শুক্রবার (৫ জুলাই) বাকিংহাম প্যালেসে লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর নতুন সরকারপ্রধান তার নতুন মন্ত্রিসভার নাম প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন নতুন এই মন্ত্রিসভায়।
উপ-প্রধানমন্ত্রীসহ রেকর্ড ১১টি পদে নারীদের বেছে নিয়েছেন স্টারমার। ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম নারী চ্যান্সেলর হিসেবে র্যাচেল রিভস এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যাঞ্জেলা রায়নার নিয়োগ পেয়েছেন। লেবার পার্টির অন্যতম শীর্ষ পদধারী নারী এভেট কুপা স্টারমারের মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
থিংকট্যাংক ব্রিটিশ ফিউচারের তথ্য অনুযায়ী, এবারের পার্লামেন্টে জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু এমন ৮৯ জন এমপি রয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ল্যামি লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায়ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
হাউস অফ কমন্সের এবার ৪০ শতাংশের বেশি আসন নারীদের দখলে থাকবে, যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ লেবার এমপি এবং ২৪ শতাংশ কনজারভেটিভ এমপি।
১৪ বছর পর গঠন করা এ মন্ত্রীসভায় এশীয় বংশোদ্ভূত দুই মন্ত্রী রয়েছেন, তারা হলেন— মুসলিম নারী এমপি শাবানা মাহমুদ ও লিসা ন্যান্ডি। আইনজীবী শাবানা মাহমুদকে করা হয়েছে বিচার প্রতিমন্ত্রী ও লর্ড চ্যান্সেলর। সাবেক কনজারভেটিভ নেত্রী লিজ ট্রাসের পর তিনিই দ্বিতীয় নারী, যিনি এ দায়িত্ব পেলেন। এছাড়া লিসা নন্দি দায়িত্ব পেয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের।
এ ছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং, শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন, এড মিলিবেন্ড জ্বালানীমন্ত্রী, লিজ কেন্ডাল কর্ম ও পেনশনমন্ত্রী, জোনাথন রেনল্ডস ব্যবসা ও বাণিজ্যমন্ত্রী, পিটার কাইল বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিমন্ত্রী, লুইস হাই পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
প্রায় ৪০ বছর ধরে হ্যাকনি নর্থ ও স্টোক নিউইংটন আসনে দায়িত্ব পালন করা লেবার পার্টির প্রবীণ সদস্য ও ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী এমপি ডায়ান অ্যাবট মাদার অফ দ্য হাউজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
১৯৭৯ সালের পর এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক নবাগত এমপিরা পার্লামেন্টে বসবেন। পার্লামেন্টের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৩৩৪ জন এমপি নতুন। এর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপিদের ৭৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং লেবার এমপিদের ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে এক-পঞ্চমাংশের কিছু বেশি এমপি ছিলেন নতুন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪১২টি আসনে জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে মাত্র ১২১টি আসন। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা হারিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি।