বিতর্কে মাইক্রোফোন বন্ধ থাকা নিয়ে ট্রাম্প ও হ্যারিসের বাকবিতণ্ডা
আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে আয়োজিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে এক পক্ষ কথা বলার সময় অপর পক্ষের মাইক্রোফোন বন্ধ থাকবে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে বাকবিতণ্ডা। আগামী মাস সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মাঝে এবিসি নিউজের আয়োজনে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিবিসির মার্কিন সহযোগী সিবিএস নিউজকে হ্যারিসের দল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা চায় পুরো সম্প্রচার জুড়ে উভয় প্রার্থীর মাইক্রোফোন খোলা থাকুক। অপরদিকে ট্রাম্পের প্রচারণা দল চায়, এবিসি বিতর্ক অনুষ্ঠানটি জো বাইডেনের সময় হওয়া বিতর্কের মতো হবে। বাইডেনের সময়ে আয়োজিত বিতর্কে উভয় পক্ষের মাইক্রোফোন বন্ধ ছিল।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নেটওয়ার্কের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং যদি অচলাবস্থা দেখা যায় তাহলে তিনি এ বিতর্ক অনুষ্ঠান এড়িয়েও যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন।
ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী হিসেবে পদত্যাগ করার আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের দলের সঙ্গে দুটি বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠান গত জুনে অনুষ্ঠিত হয়েছে অপরটি এ সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা রয়েছে। বাইডেনের প্রচারণা দল গত বিতর্কের সময় সম্মত হয়েছিল যে, যখন এক প্রার্থী কথা বলবে অপর প্রার্থীর মাইক্রোফোন বন্ধ থাকবে। ট্রাম্পের প্রচারণা দলও তাতে সম্মতি দিয়েছিল।
কিন্তু এখন, ফিলাডেলফিয়ায় এবিসি নিউজের বিতর্ক অনুষ্ঠানে হ্যারিসের প্রচারণা দল চায় মাইক্রোফোনগুলি 'হট' থাকুক অর্থাৎ সেগুলো চালু থাকুক। তারা যুক্তি দেয়, এটি উভয় প্রার্থীকে বিতর্কের মঞ্চে একে অপরকে বাধা দেওয়ার এবং উপর্যুপরি কথা বলার সুযোগ দেবে।
হ্যারিসের দলের সিনিয়র যোগাযোগ উপদেষ্টা ব্রায়ান ফ্যালন এক বিবৃতিতে বলেন, "ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবিরাম মিথ্যাচার এবং বাধা তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। ট্রাম্পের এ 'মিউট বাটন'র পেছনে লুকিয়া থাকার স্বভাবটা বন্ধ করা উচিত।"
এদিকে, গতকাল সোমবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, "তিনি বিতর্কের সময় মাইক্রোফোন চালু রাখতে চান তবে বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বাইডেনের সঙ্গে মঞ্চে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছিল। আমরা একই নিয়ম এবং একই শর্তাবলি মেনে নিয়েছি এবং আমি মনে করি এটি এমনই হওয়া উচিত, তবে তারা এটি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।"
তিনি আরো বলেন, "আসল বিষয় হলো, তারা এটা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে কারণ হ্যারিস ডিবেট করতে চায় না। সে একজন ভালো বিতার্কিক নয়।"
ট্রাম্পের দল পলিটিকোকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের এ অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, হ্যারিস ডিবেট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছেন। ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা জেসন মিলার বলেন, "আর কোনো খেলা নয়। আমরা সিএনএন বিতর্কের শর্তে এ এবিসি বিতর্কে অংশ গ্রহণ করছি। হ্যারিসের দল সিএনএন'র নিয়ম মেনে নেওয়ার পর, নোট এবং উদ্বোধনী বিবৃতিসহ একটি সিটেড বিতর্কের জন্য অনুরোধ করেছিল। আমরা সম্মত নিয়মে কোনো পরিবর্তন করিনি।"
ট্রাম্পের দলের দাবির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে হ্যারিসের দলেন একজন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে বলেন যে, "তারা ১০০% মিথ্যা বলছে।"
গত রোববার ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ট্রুথে প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, "এবিসি নিউজের সাংবাদিকরা কি বিতর্কের আগে কমলা হ্যারিসকে প্রশ্নগুলো দিয়ে দেবেন? তাহলে আমি কেন সেই বিতর্কে হ্যারিসে সঙ্গে অংশ নিবো?"
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারই প্রথম নন। তিনি বেশ কয়েকবারই বিতর্ক থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন।