মৃত্যুর পরেও জীবন ফিরিয়ে আনা সম্ভব, দাবি মেডিসিন অধ্যাপকের
হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়াই মৃত্যু নয়। মৃত্যুর পর মানুষের মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকতে পারে এবং এই সময়কাল ঘণ্টা নয়, হতে পারে এক দিন বা তারও বেশি। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাংন মেডিকেল সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক স্যাম পারনিয়া এমনটাই দাবি করছেন।
টেলিগ্রাফে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্যাম পারনিয়া বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও মৃত্যুর পুরোনো ধারণার মধ্যে আটকে আছে। গত বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট রোগী তাদের হৃৎপিণ্ড বন্ধ হওয়ার এক ঘণ্টা পরেও মৃত্যুর অভিজ্ঞতার স্মৃতি ধরে রেখেছিল। এমনকি তাদের ব্রেইন অ্যাক্টিভিটি থেকেও এমন ঘটনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ৪০ শতাংশ রোগীর মস্তিষ্ক কার্যক্রম কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) দেয়ার এক ঘণ্টার পর স্বাভাবিক বা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে যায়।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়, মস্তকবিহীন একটি শূকরের মস্তিষ্ক ১৪ ঘণ্টা পরও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। স্যাম বলেন, মৃত্যু একটি সামাজিক কনভেনশন যা বৈজ্ঞানিক বাস্তবতার সাথে মেলে না।
কেবল এক্সট্রাকর্পোরাল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (ইসিএমও) মেশিন ব্যবহার করে নয়, বরং নির্দিষ্ট ধরনের ওষুধের মিশ্রণ ব্যবহার করেও মৃত্যুর পর মস্তিষ্ক জীবিত করা সম্ভব। স্যাম জানান, তার দলই বিশ্বের একমাত্র দল যারা এই ধরনের 'সিপিআর ককটেইল' (যার মধ্যে এপিনেফ্রিন, ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিন, ভিটামিন সি, এন্টিডিউরেটিক ড্রাগ ভাসোপ্রেসিন এবং ক্লান্তি নিরসনকারী সালবুটিয়ামাইন অন্তর্ভুক্ত) ব্যবহার করে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের রোগীদের পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম।
৫৩ বছর বয়সি স্যাম আরও জানান, বয়স এবং স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি নিজেই শিগগির কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন। তার ভাষ্যে, যদি তার হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যায়, তবে কেন তাকে মৃত থাকতে হবে যখন ইসিএমও এবং সিপিআর ককটেইল ব্যবহার করে পুনরুদ্ধারের সুযোগ রয়েছে?
স্যামের মতে— বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে, মৃত্যুকে জীবনের সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত পরিণতি ভাবার পরিবর্তে, একটি আঘাত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে।