বাংলাদেশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় কলকাতায় ইলিশের কেজি ২ হাজার, দিল্লিতে ৩ হাজার রুপি
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়ার পর কলকাতার অভিজাত এলাকা বালিগঞ্জের বাসিন্দা অমিতা মুখার্জি ৩,৫০০ রুপি দিয়ে একটি বড় ইলিশ কিনতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার পরিবার খিচুড়ির সাথে ইলিশ ভাজা খেতে চায়, বিশেষ করে বৃষ্টির সময় এটি আমাদের বাঙালি ঐতিহ্যের একটি অংশ। কিন্তু ইলিশের দাম এত বেড়েছে যে পকেটে এর বড় ধরনের চাপ পড়ছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায়, দেশটির মাছ বিক্রেতারা অবৈধভাবে ইলিশ আমদানি করছেন অথবা স্টকে থাকা হিমায়িত মাছগুলো আকাশচুম্বী দামে বিক্রি করছেন।
দিল্লির বাজারে বাংলাদেশি ইলিশের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৩ হাজার রুপিতে পৌঁছেছে। এর ফলে রেঁস্তোরাগুলো আসন্ন দূর্গাপূজায় তাদের খাবারের মেনুর দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে, শেষ পর্যন্ত যার ফল মূলত সাধারণ মানুষকে ভোগ করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লির সিআর পার্ক মার্কেটের এক মাছের আড়তের মালিক জানান, তিনি এবং তার মতো আরও অনেকে অবৈধভাবে ইলিশ মাছ কিনে তিন হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, 'দুর্গাপূজা আসায় বাঙালি ক্রেতাদের চাহিদা বেড়েছে। তাদের চাহিদা তো আমাদেরই পূরণ করতে হবে।'
কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারের একজন পাইকারি মাছ বিক্রেতা জানান, তিনি প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন, যেখানে প্রতিটি মাছের ওজন কমপক্ষে ১.৫ কেজি।
তিনি জানান, গোপন চ্যানেলের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইলিশ ভারতে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিক্রেতার মতে, বাংলাদেশের ইলিশের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক ছিল ভারত। নিষেধাজ্ঞার আগে কলকাতা ও দিল্লিতে টাটকা ইলিশ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হত।
চেন্নাইয়ে বাংলাদেশি ইলিশ বিক্রির একমাত্র বিক্রেতা জে কে ফিশ স্টল আদিয়ারের করিম ভাই তার সমস্ত হিমায়িত স্টক বের করেছেন এবং এগুলো হট কেকের মতো বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে ১০০ কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতি কেজি ইলিশের দাম ১৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'উৎসব শেষ হলে এক মাস পর দাম কমবে।'
চেন্নাইয়ের ক্লাউড কিচেন 'আহার'-এর মালিক অত্রি কুমার সিনহা বলেন, 'কাঁচা ইলিশের দাম এতটাই বেশি যে বাধ্য হয়ে এক পিস ভাপা ইলিশ (সরিষা ভাপা ইলিশ) ৫০০ টাকায় বিক্রি করছি, যা আগে আমি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতাম।'
ব্যাঙ্গালোরের ভোজোহরি মান্নার কোরামঙ্গলা শাখার ব্যবস্থাপক শান্তনু হালদার বলেন, 'আমরা ভাপা, বরিশালী এবং মেঘনার মতো বিভিন্ন নামে যথাক্রমে জাম্বো, সুপার জাম্বো এবং মিনি তিনটি আকারে একটি করে প্লেট পরিবেশন করি। নিষিদ্ধ হওয়ার পর ইলিশের দাম আকাশচুম্বী থাকায়, বাজারের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে দাম বাড়ানো যায় কি না বর্তমানে তা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।'
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি