ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ মার্কিন কমিশনের, প্রতিবেদনকে 'পক্ষপাতদুষ্ট' দাবি ভারতের
ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ফের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)।
গতকাল বুধবার (২ অক্টোবর) ইউএসসিআইআরএফ নিজেদের ওয়েবসাইটে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, 'ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে।'
তবে এই প্রতিবেদনকে 'পক্ষপাতদুষ্ট' আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কীভাবে ২০২৪ সালজুড়ে উগ্রবাদীরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে, ধর্মীয় নেতাদের কীভাবে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়গুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে তা এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ইউএসসিআইআরএফ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে পরামর্শ দিয়ে বলেছে, ভারতকে 'বিশেষ উদ্বেগের দেশ' বা সিপিসি তালিকাভুক্ত করতে। কারণ ভারত ধর্মীয় স্বাধীনতার নিয়মতান্ত্রিক, চলমান ও গুরুতর লঙ্ঘনে জড়িত। এসব বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এতে।
প্রতিবেদনে ইউএসসিআইআরএফ জানিয়েছে, সিনিয়র পলিসি অ্যানালিস্ট সীমা হাসানের লেখা ভারত সম্পর্কিত এই অনুচ্ছেদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং তাদের উপাসনালয়গুলোর বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আক্রমণকে উসকে দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ঘৃণাত্মক বক্তব্যসহ ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তির ব্যবহারও তুলে ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে, দৃঢ়ভাবে ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত সরকার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটিকে 'পক্ষপাতদুষ্ট' বলে প্রত্যাখান করেছে এবং ইউএসসিআইআরএফকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবরণ' প্রচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসসিআইআরএফ বিষয়ে আমাদের মতামত সুপরিচিত। এটি একটি পক্ষপাতদুষ্ট সংগঠন, যার রাজনৈতিক এজেন্ডা রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এই পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করি, যা কেবল ইউএসসিআইআরএফকে আরও অসম্মানিতই করে।'
মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকারের আমল থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ভারত ধারাবাহিকভাবে ইউএসসিআইআরএফ সদস্যদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ভারত এবং বেশ কয়েকটি ভারতীয়-আমেরিকান গোষ্ঠী অতীতেও ইউএসসিআইআরএফের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট, অবৈজ্ঞানিক এবং বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগ করেছে।
ইউএসসিআইআরএফ বলেছে, 'নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), ইউনিফর্ম সিভিল কোড এবং বেশ কয়েকটি রাজ্য-স্তরের ধর্মান্তরবিরোধী ও গোহত্যা আইনসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য ভারতের আইনি কাঠামোর পরিবর্তন এবং তার প্রয়োগ কীভাবে ঘটেছে তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে।'
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি