শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিভিআইপিদের জন্য নির্মিত হবে পৃথক টার্মিনাল
অতি- গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিভিআইপি) জন্য ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণ করা হবে পৃথক একটি টার্মিনাল। ভিভিআইপি টার্মিনালটি নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের নকশায় থাকলেও, পরে তা বাতিল করা হয়।
তবে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) পুনরায় এটি চলমান প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরের পশ্চিম দিকের রানওয়ের পাশে নির্মাণ করা হবে ভিভিআইপি টার্মিনাল। এর ব্যয় প্রক্ষেপণ করা হয়েছে প্রায় ২৮৩ কোটি টাকা। তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পে দেওয়া ২১,৩৯৯ কোটি টাকার বিপুল বরাদ্দ থেকে বেঁচে যাওয়া অর্থ দিয়েই এটি নির্মিত হবে।
বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলি বলেন, 'ভিভিআইপিদের ২৪ ঘণ্টা সেবাদানের লক্ষ্যে পৃথক টার্মিনাল নিমার্ণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। এতে বিমানবন্দরে সাধারণ যাত্রীদের চলাচল সহজ হবে, এবং অন্যান্য টার্মিনালের ওপর চাপ কমবে'।
()
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্প থেকে আমরা এরমধ্যেই ৮০০ কোটি টাকা বাঁচাতে পেরেছি। তাই এজন্য আমাদের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই'।
২০১৭ সালে প্রায় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ব্যয় প্রক্ষেপণ করে তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। দুই বছর পর এটি সংশোধন করে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা করা হয়।
কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলেছে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। আগামী বছরের শেষ নাগাদ এটির 'সফট লঞ্চ' করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে'।
()
এই প্রকল্পের প্রাথমিক নকশায় অন্তর্ভুক্ত ছিল– বিমানবন্দরের নিকুঞ্জ অংশে ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণ। পরে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় সেটি বাতিল করা হয়। তার পরিবর্তে তৃতীয় টার্মিনাল দিয়েই ভিভিআইপিদের সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক।
তবে সাধারণ টার্মিনালে ভিভিআইপিদের সেবা দিতে গিয়ে– বিমানবন্দরের সার্বক্ষণিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছে বেবিচক। এজন্য আবারো সিদ্ধান্ত বদলেছে।
এদিকে ১৯ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে, ভিভিআইপি টার্মিনাল এবং বোর্ডিং ব্রিজের জন্য পিয়ার বর্ধনে প্রয়োজন হবে ২০১ মিলিয়ন ডলার বা ১,৮৮৯ কোটি টাকা।
এর মধ্যে পিয়ার বর্ধনে লাগবে ১৭২ মিলিয়ন ডলার এবং ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণে প্রয়োজন হবে ২৯ মিলিয়ন ডলার।
()
চিঠিতে আরো জানানো হয়, অতিরিক্ত আইটেম দুটির ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প সংশোধনের প্রক্রিয়া শেষ করে তা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
প্রস্তাবিত নতুন দুটি অঙ্গ বাস্তবায়ন করা হলে– তৃতীয় টার্মিনাল এরিয়া ২,৩০,০০০ বর্গমিটার থেকে বেড়ে ২,৬০,০০ বর্গমিটারে উন্নীত হবে বলে জানান বেবিচকের কর্মকর্তারা।
কোরিয়ার স্যামসং কোম্পানির সাথে দেশের প্রধান বিমানবন্দরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে জাপানের মিতুশুবিশি কর্পোরেশন ও ফুজিতা কর্পোরেশন।