সেফটি প্রকল্পের ২৭ হাজার চিংড়ি চাষীর উৎপাদন বেড়েছে ১৬.৬%
সেফ অ্যাকোয়া ফার্মিং ফর ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড ইমপ্রুভমেন্ট (সেফটি) প্রকল্পের অধীনে ছয় বছরে ২৭,০০০ চিংড়ি চাষীর চিংড়ি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬.৬ শতাংশ। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া, তাদের চিংড়ি বিক্রি ৪৭ শতাংশ এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে ১২৫ শতাংশ। ২০১৭ সালে চিংড়ি চাষীরা হেক্টর প্রতি ২৯৫ কেজি গড় উৎপাদন করলেও এখন তারা ৬৬৪ কেজি উৎপাদন করছেন।
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর এবং কক্সবাজারের ১০টি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-এর অর্থায়নে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি উইনরক ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে স্থানীয় অংশিদারিত্বের মাধ্যমে বাস্তবায়নের কাজ করেছে বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশন, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এবং ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। চলতি বছর প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে।
সেফটি প্রকল্পের প্রধান এসএম শাহীন আনোয়ার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, প্রকল্পে সুপারিশকৃত উন্নত চাষের ছয়টি ধাপ অনুসরণ করার পর চিংড়ির বার্ষিক গড় উৎপাদন বেড়েছে। শুরুতে কৃষক প্রতি বিক্রয় মূল্য ছিল ৯১৮ ডলার, যা ২০২১ সালে বেড়ে ২ হাজার ৪৪ ডলারে পৌঁছায়।
সেফটি প্রকল্পটি চিংড়ি খাতে ভ্যালু চেইন অ্যাক্টর এবং স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে বাণিজ্য ও রপ্তানি মূল্য সম্প্রসারণে অবদান রেখেছে।
ইউএসডিএ-এর ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ভিক্টোরিয়া বেকার বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের চিংড়ি ও চিংড়ি চাষের সঙ্গে জড়িত কৃষকদের জীবন ও জীবিকা উন্নত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা আগে পুরনো পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করতো। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে ৬টি বিষয় বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। এর মধ্যে চিংড়ি চাষে পানির গভীরতা ৩ থেকে ৫ ফুট রাখা ও ঘেরের তলদেশ কাদামুক্ত রাখা, ঘেরের পানি পরিশোধন ও জীবাণুমুক্ত করা, রোগ জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ, সুস্থ সবল পোনা বাছাই করা, ভালো মানের খাবার পরিমিত মাত্রায় দেওয়া এবং চিংড়ি ও পানির গুণগতমান নিশ্চিত করা।
সম্প্রতি এই প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ২ লাখ ৫১ হাজার টন চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে। চিংড়ি হ্যাচারিগুলোকে এসপিএফ পিএল (স্পেসিফিক প্যাথোজেন ফ্রি পোস্ট লার্ভা) হ্যাচারিতে রূপান্তরের কাজ চলছে।
এই বছর তিনটি অনুমোদিত এসপিএফ হ্যাচারি থেকে ৬২১ মিলিয়ন এসপিএফ চিংড়ি পিএল উৎপাদন করা হয়েছে। চিংড়ি খাতে ট্রেসেবিলিটি সিস্টেম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রায় দুই লাখ চিংড়ির খামার এবং ৯ হাজার ৬৫১টি বাণিজ্যিক চিংড়ি খামার নিবন্ধিত হয়েছে। দেশে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন চিংড়ি উৎপাদনের জন্য সকল হ্যাচারিকে এসপিএফ পিএল উৎপাদনে এগিয়ে আসতে হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।