ঢাকার ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপ
ঢাকার ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছে। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার উপস্থিতি কিছুটা বেশি পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্ষা পরবর্তী এডিস মশার জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৬ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ১০৮টি ওয়ার্ডে এই জরিপ চালানো হয়। এরমধ্যে ডিএনসিসির ৪০টি এবং ডিএসসিসির ৫০টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৫০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। এ সময় ১২৭টি বাড়িতে এডিস মশা পাওয়া গেছে, যা শতকরা ৪.০৩ শতাংশ। যেসব বাড়িতে মশা পাওয়া গেছে তার মধ্যে ৩৯.৮ শতাংশ বহুতল ভবন এবং ৩২ শতাংশ নির্মাণাধীন ভবন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মশার উপস্থিতি রয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বেশি। উত্তরে শতকরা ৩.৮ শতাংশ বাড়িতে মশা পাওয়া গেছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এই হার ৪.১৮ শতাংশ। ডিএনসিসির কোনো ওয়ার্ডে মশার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ পাওয়া যায়নি। ডিএনসিসির ৩, ২৩, ২৬ এবং ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ১০ এর বেশি। ডিএসসিসি এলাকায় ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ২৪.১৪ শতাংশ পাওয়া গেছে। এছাড়া ২, ১৬ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ১০ এর বেশি পাওয়া গেছে। কোনো এলাকায় এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্সের মাধ্যমে। এই ইনডেক্স ২০ এর বেশি হলেই তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, "বর্ষা পরবর্তী জরিপ দিয়ে মশার উপদ্রব কেমন হবে তা বোঝা যায় না। কারণ এ সময় বৃষ্টি কম থাকে। এপ্রিল-মে মাসে যে জরিপ হবে তার ফলাফল দিয়ে বোঝা যাবে এ বছর পরিস্থিতি কী হবে। এডিস মশার একটা সাইকেল থাকে, ফেব্রুয়ারিতে যে সাইকেল ছিল সেটা এখন নাই। নতুন সাইকেল শুরু হয় এপ্রিলে। সেটা ধরে নতুন ট্রেন্ড কী হতে পারে তা ধরা যাবে। এজন্য অতি দ্রুত বর্ষা পূর্ববর্তী জরিপ করতে হবে।"
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, "ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। এ কারণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা জরুরী। এই জরিপের কারণে কোন কোন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ তা জানা যাবে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করবে।"
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ১ জানুয়ারি থেকে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে ৯০১ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।