সরকার বিদেশি মিশনে আনসারদের মাধ্যমে বিকল্প সুবিধা দেবে: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, চার কূটনীতিকের জন্য 'অতিরিক্ত নিরাপত্তা এসকর্ট' প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় বিকল্প হিসেবে সরকার ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি মিশনগুলোতে আধাসামরিক সহায়ক বাহিনী আনসারের সেবা দেবে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আনসার কী ধরনের নিরাপত্তা সুবিধা দিতে পারবে তা জানতে এবং এই সেবা নিতে ইচ্ছুক মিশনগুলোর সঙ্গে যাতে সংযোগ স্থাপন করতে পারে সে বিষয়ে তারা বুধবার আনসার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি বলেন, 'আমরা আনসারের সঙ্গে কথা বলব এবং মিশনগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।' অতিরিক্ত এসকর্ট প্রধানত ট্র্যাফিক ক্লিয়ারেন্সের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় স্বাগতিক দেশ হিসেবে সরকার দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত এবং বিদেশি মিশন ও তাদের কর্মীদের জন্য নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোমেন বলেন, তারা দেশে কোনো নিরাপত্তা ঘাটতি ও জঙ্গিবাদ দেখছেন না এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন যে পুলিশ কর্মীদের অভাব বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
কূটনীতিকদের গাড়িতে পতাকা ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি এমন একটি বিষয় যা মূলত ব্যক্তির বিবেচনার ওপর নির্ভর করে এবং তিনি মনে করেন যে, কূটনীতিকরা কোথায় পতাকা ব্যবহার করবেন বা করবেন না তা তারা বুঝবেন।
কূটনীতিক হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোমেন বলেন, নিউইয়র্কে থাকার সময় পতাকা ব্যবহারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, কিন্তু অনেক দেশেই রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় পতাকা ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, 'আমি যদি কোনো মার্কেটে বা কোনো সহকর্মীর ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে যাই তবে আমি সেই সময় পতাকাটি ব্যবহার করব না। এটা ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।'
এর আগে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, 'তারা (বিদেশি মিশনগুলো) চাইলে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে তা পেতে পারে। আমরা করদাতাদের টাকা দিয়ে এই অতিরিক্ত (নিরাপত্তা) এসকর্ট সার্ভিস দেব না।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'উন্নত দেশগুলোতে কোনো সরকারই এ ধরনের অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দেয় না।'
মন্ত্রী বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হয়নি যে এ ধরনের সেবা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ১৫ মে (মার্কিন সময়) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে কথা বলতে চাচ্ছি না।' তবে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনও দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও এর কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে হবে এবং কর্মীদের ওপর কোনও আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর সব পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঢাকায় মার্কিন ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অতিরিক্ত নিরাপত্তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্যাটেল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বিশেষে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী।