ডেঙ্গু মোকাবেলায় ১২১.৮৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশা দমনে ১২১.৮৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে চায়, যা সিটি কর্পোরেশনের মোট বাজেটের প্রায় ২.৩২ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরে ঢাকা উত্তরের জন্য বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২৬৮.৪৫ কোটি টাকা।
গত অর্থবছর ২০২২-২৩ এ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সংশোধিত বাজেট ছিল ২৯৫০.৯৮ কোটি টাকা। এ সময়ে সিটি কর্পোরেশন মশা দমনে ব্যয় করেছে ৭৪.৮৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মশা নিয়ন্ত্রণ বাজেটের ১২১.৮৪ কোটি টাকার মধ্যে বিভিন্ন খাত যেমন- মশার ঔষধ ক্রয়ে ৪৫ কোটি টাকা, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ৩০ কোটি টাকা এবং মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৩০ কোটি টাকা।
এছাড়া ডেঙ্গু মোকাবেলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচারে সিটি কর্পোরেশন ৭.৩৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে চায়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আয় হয়েছে ১১৮০.৯০ কোটি টাকা, যা এই সিটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয়। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮৩০.৮৮ কোটি টাকা।
মশা দমনের অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মশা নিধন বিষয়ক এক লাখ সচেতনতামূলক বই বিতরণ করবে উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
রোববার (২৩ জুলাই) 'মশার কামড় ক্ষতিকর' শীর্ষক একটি কার্টুন ছবি সমৃদ্ধ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
বইটি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি ডেড কাউন্টিতে শিশুদের মাঝে বিলি করা একটি বইয়ের বঙ্গানুবাদ।
১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে বিভিন্ন কার্টুনসহ সচেতনামূলক বাক্য দেওয়া হয়েছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, "আমরা আমাদের ছোটমনিদের জানাতে চাই যে মশার কামড় ক্ষতিকর। তাদেরকে জানাতে পারলে আমরা মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে পারবো।"
"আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই, মশার বিরুদ্ধে। শিশুরা যদি মশার বিষয়ে জানতে পারে এবং কামড় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে, তবে অনেকাংশেই আমরা মশাবাহিত রোগ রুখতে পারবো। শিশুরা মশার প্রজননস্থল, ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলে পরিবারে এর প্রভাব পড়বে," যোগ করেন মেয়র।
তিনি আরও বলেন, "সিটি কর্পোরেশন থেকে বই উত্তরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়া হবে। এই বই বিতরণ শেষ হলে আমরা আরও বই ছাপিয়ে শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেবো।"
চলতি বছর দেশে আবারো দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। এই বাস্তবতায়– মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণ এবং ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের একটি পূর্বাভাস মডেল তৈরিতে ১,২৮৮ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প নিয়েছে সরকার।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং নিকটবর্তী দুটি পৌরসভা– সাভার ও তারাবো'য় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)-ও প্রকল্পের আওতায় থাকবে।
রাজধানী ঢাকায় ৪,১৪৯ জনসহ মোট ৭,১৭৫ ডেঙ্গু রোগী বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রোববার (২৩ জুলাই) সকাল পর্যন্ত এ বছরে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩২,৯৭৭; আর এ থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৫,৬২৬ জন।
গতবছর ২০২২ সালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৮১ জন, যা ২০১৯ সালের পরে সর্বোচ্চ। এছাড়া, গতবছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২,৪২৩ এবং সুস্থ হয়েছিলেন ৬১,৯৭১ জন।