জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পারব ভাবতেও পারিনি: ঢাকায় ফিরে বললেন জাতিসংঘ কর্মকর্তা
দেড় বছর আগে ইয়েমেনে আল-কায়েদার হাতে অপহৃত হওয়ার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম বুধবার ঢাকায় ফিরে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, তিনি আর কখনো দেশে ফিরতে পারবেন বলে ভাবেননি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) তাকে উদ্ধার করে।
বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, সুফিউল আনামকে বহনকারী বিমানটি আজ (৯ আগস্ট) বিকেল ৫টার কিছু পরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
তিনি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, 'পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ঘাঁটিতে ফেরার সময় আমাকে অপহরণ করা হয়। দুটি গাড়িতে দুজন চালকসহ আমরা ছয়জন [বিভিন্ন দেশের] ছিলাম।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদেরকে মাঝরাস্তায় একটি চেকপয়েন্টে আটকে বন্দুকের মুখে অপহরণ করা হয়। সেখান থেকে আমাদেরকে পাহাড়ের মাঝখানে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।'
'সন্ত্রাসীরা অপহরণ করার পর জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পারব, এটা ভাবতেও পারিনি। গত ১৮ মাস অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিবেশের মধ্যে ছিলাম। মনে হয়েছিল, যেকোনো সময় তারা আমাকে মেরে ফেলতে পারে।'
সন্ত্রাসীরা তাদের পাহাড়ে ও মরুভূমিতে রেখেছিল জানিয়ে সুফিউল বলেন, 'সারাক্ষণ আমার চোখ বাঁধা ছিল।'
'তারা আমার অবস্থান ১৮ বার পরিবর্তন করে। তবে ভাগ্য ভালো ছিল, তারা নির্যাতন করেনি।'
এর আগে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতে সুফিউল আনামকে উদ্ধারের খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে একাধিক সূত্র।
উদ্ধারের পরপরই লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম তাকে উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এনএসআই-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, 'আমি ভালো আছি। আমার সব মেডিকেল টেস্ট হয়ে গেছে। আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।'
২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সুফিউল আনামকে আল-কায়েদার সদস্যরা ইয়েমেনের মুদিয়াহ প্রদেশ থেকে অপহরণ করে। তার মুক্তিপণ হিসাবে ৩০ লাখ ডলার চেয়েছিল অপহরণকারীরা।
সুফিউল আনাম ইয়েমেনের সাবেক রাজধানী এডেনে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অভ সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি-এর ফিল্ড সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেশন অফিসার (প্রধান) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।