অজানা-অখ্যাত শিল্পীদের ছবির বাজার: কারা কেনেন এসব ছবি?
বাপ্পি আহমেদ একজন পেশাদার চিত্রশিল্পী। নিউমার্কেটের পেইন্টিংয়ের দোকানগুলোর জন্য যারা ছবি আঁকেন, তিনি তাদের অন্যতম। ছোটবেলায় শিশু অ্যাকাডেমিতে যাতায়াতের দরুন ছবি আঁকার প্রতি ভালোবাসা জন্মে তার। পারিবারিক কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেননি। কিন্তু চিত্রশিল্পের প্রতি তার আশৈশব ভালোবাসার কখনো কমতি হয়নি। একসময় অর্থসংস্থানের জন্য যোগ দেন 'নবরমণী' নামক একটি প্রতিষ্ঠানে — সেখানে শাড়ির ওপর নানা নকশা আঁকতেন তিনি।
তখনও ছবিতে রংয়ের ব্যবহার, পেন্সিলের পার্থক্যের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তিনি। তবু বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিয়মিত পুরস্কার জিততেন তিনি। এরই ফাঁকে চকবাজারের কিছু দোকানের জন্য কালো ভেলভেট কাপড়ে নানা প্রাকৃতিক দৃশ্য আঁকতে শুরু করেন বাপ্পি। সেগুলো চকবাজারে চললেও স্থান পায়নি নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে। তখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ছবি আঁকা শেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হওয়া পরপরই তিনি নজর কাড়েন শিক্ষকদের। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হতো বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। সফলতাও পান বেশ কয়েকটিতে। অ্যাকাডেমির পড়াশোনা শেষে নিজের মেধা ও সাধনায় একজন শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন বাপ্পি।
নিউমার্কেটের দক্ষিণ দিকে 'জি' ব্লক এবং উত্তরের 'ডি' ব্লকের শৌখিন দ্রব্যের দোকানগুলোর জন্য ছবি আঁকেন বাপ্পি। ঢাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের ঘর সাজানোর পেইন্টিং এবং ওয়ালম্যাট বিক্রি হয় এখানে। ঘরের দেওয়ালগুলোয় একটু নান্দনিকতা জুড়ে দেওয়া বা বেডরুমটি আরেকটু সাজিয়ে তোলা, তার জন্য এসব দোকানই সেরা জায়গা।
নিউমার্কেটের রঙিন দুনিয়া
নিউ মার্কেটের 'জি' এবং 'ডি' ব্লকের চিত্রকর্মের কিছু দোকান আলাদাভাবে নজর কাড়ে। সেই যে ইউরোপীয় রেঁনেসার মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের মধ্যে কদর বেড়েছিল চিত্রকলার, তা আজও অমলিন। এখনও সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চিত্রকর্মের আধিপত্য ম্লান হয়নি একটুও। জি ব্লকের নিচ তলায় সিঁড়ির পাশ ঘেঁষে মোট ৭–৮টি দোকান। এম. এম. আর্ট, আর্ট গ্যালারি ইত্যাদি দোকানগুলোর ভেতরে সারি সারি সাজানো রয়েছে বিভিন্ন পেইন্টিং আর ওয়ালম্যাট।
এ ব্লকে মোহাম্মদ ইয়াসিনের দোকানটির নাম আর্ট কর্নার। ছোট্ট আকারের দোকানটিতেই গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে পেন্সিল স্কেচ, জলরং, তেলরংয়ে আঁকা নানা আকার ও দৃশ্যের চিত্রকর্ম। এক হাতে এঁটে যায় এমন ছোট পেইন্টিং থেকে শুরু করে বিশাল আকারের পেইন্টিংও রয়েছে। পাশাপাশি আছে নানা আকারের ওয়ালম্যাট। এগুলোতে প্রধানত ফুটে উঠেছে ইসলামি ভাবধারা — কোনোটিতে আরবি অক্ষর বা বিভিন্ন সুরার ক্যালিগ্রাফি, কোনোটায় আবার মক্কা-মদিনার দৃশ্য।
ডি ব্লকের মারিয়া মরিয়ম আর্ট গ্যালারি, জুবায়ের ফ্রেম গ্যালারি চন্দ্রিমা মার্কেটে বেশ জনপ্রিয়। তবে এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দোকানটির নাম আলিফ এন্টারপ্রাইজ। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে সোহেল ইসলাম সজীব ও তার স্ত্রী রুবিন আক্তার রুবি দোকানটি দেখাশোনা করছেন। রফিকুন নবী, হাশেম খানসহ বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের ছবি এ দোকানের বড় আকর্ষণ। এর বাইরে চারুকলার শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবিরই প্রাধান্য।
এ দোকানের সবগুলো ছবিই দৃশ্য ও রংয়ের দিক দিয়ে স্বতন্ত্র। পেন্সিল স্কেচগুলোতে দেখা মেলে ঢাকা শহরের অলিগলি, বৈদ্যুতিক তারের ফাঁকে উঁচু ভবন আর রিকশা চালকের পরিশ্রমী অবয়ব। জলরং আর তেলরংয়ে আঁকা চিত্রকর্মগুলোতে শোভা পায় প্রাকৃতিক দৃশ্য। সূর্য প্রায় অস্তমিত, আকাশে লালচে আভা, এমন সময় দুজন বালক নদীর তীর ধরে যাচ্ছে মাছ শিকারে কিংবা নদীর ধারে গাছপালাবেষ্টিত কয়েকটি বাড়ি, ঘাটে বাঁধা রয়েছে নৌকা — এমন প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
রুবিন আক্তার জানালেন, ক্রেতারা এসে প্রায়ই গ্রামের দৃশ্য খোঁজেন। নদী, নৌকা, পথঘাট এগুলোই বেশি চলে। জনপ্রিয় পেইন্টিংয়ের মধ্যে আরও আছে 'অ্যাবস্ট্রাকট আর্ট' তথা বিমূর্ত চিত্র। মূলত নানা ধরনের রং ব্যবহার করে শিল্পী তার মনের মাধুরী মিশিয়ে এমন চিত্রকর্ম আঁকেন, যা হয়তো জাগতিক কোনো দৃশ্য নয়, কিন্তু জন্ম দেয় নান্দনিকতাবোধের।
বাড়ছে ক্রেতাদের আনাগোনা
রিপন হোসেন এবং তার স্ত্রীর হাতে রাজ্যের কেনাকাটা। ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। নিজেদের শোবার ঘরের জন্য কিছু পেইন্টিং কিনবেন ভেবে তারা দুজন এসেছেন মার্কেটের দক্ষিণ পাশটায়।
এ দোকান ও দোকান ঘুরে এ দম্পতি শেষ পর্যন্ত তেলরং আর জলরংয়ের দুটি পেইন্টিং কিনলেন। দুটো ছবিই কাঠের ফ্রেমে বাঁধাই করা — ১৬ ইঞ্চি বাই ২৫ ইঞ্চির। দাম পড়ল ৩,৬০০ টাকা। 'আমাদের বেডরুমের জন্য একটা, আর বসার ঘরের জন্য একটা। বেশ কম দামে ভালো-ভালো ছবি কিনতে পাওয়া যায় বলেই আসা,' বলেন রিপন।
গৃহসজ্জায় মধ্যবিত্তের পছন্দের জায়গায় স্থান পেতে শুরু করেছে চিত্রকর্ম ও বিভিন্ন নান্দনিক দ্রব্য। ছুটির দিনগুলোতে এসব দোকানে দম ফেলবার ফুরসত পান না বিক্রেতারা। দোকানগুলোর এত এত সংগ্রহ দেখে ক্রেতারা প্রায়ই দ্বিধায় পড়েন। এক ওয়ালম্যাটই রয়েছে কয়েক ধরনের। চাহিদা বেশি থাকায় কোনো কোনো দোকানে পেইন্টিংয়ের চেয়ে ওয়ালম্যাটের সংখ্যাই বেশি। এসব ওয়ালম্যাটের প্রধান উপজীব্য হলো ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয়।
তবে ওয়ালম্যাট হোক বা পেইন্টিং, ক্রেতারা আসছেন, নিয়মিত কিনছেন, এটাই স্বস্তির খবর বলে জানালেন আলিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক। 'বিক্রি অনেক ভালো। মানুষ শৌখিন দ্রব্য হিসেবে এগুলো কেনে। আর আমরা অনেক কোম্পানি থেকে বড় বড় অর্ডার পাই। বড় কোম্পানিগুলো ১,২০০–১,৫০০, অনেক সময় আরও বেশি পণ্য কেনে আমাদের কাছ থেকে।'
ছবিভেদে দাম আলাদা
পেইন্টিং বা ওয়ালম্যাটের দাম নির্ভর করে মূলত আকার ও তৈরির উপকরণের ওপর। বাঁধাই করার ফ্রেমও দামে পার্থক্য এনে দেয়। মূলত কাঠ ও ফাইবার, এ দুই ধরনের ফ্রেম ব্যবহার করা হয়। বেশি স্থায়িত্বের কারণে কাঠের ফ্রেমই তুলনামূলক দামি হয়ে থাকে।
ছবিগুলোর মাপ শুরু হয় ১০ ইঞ্চি বাই ১০ ইঞ্চি থেকে। জলরংয়ে আঁকা এবং সাদা ফাইবার ফ্রেমে বাঁধাই করা পেইন্টিংগুলোর দাম সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা। কাঠের ফ্রেমের দেড় ফুট বাই দুই ফুট অয়েল পেইন্টিংগুলো কেনা যায় ১,৫০০–২,৫০০ টাকার মধ্যে। নিউমার্কেটে ৩০ ইঞ্চি বাই ৪০ ইঞ্চিকে ধরা হয় মাঝারি আকারের চিত্রকর্ম হিসেবে। মানভেদে এ আকারের একটি তেলরংয়ে আঁকা ছবির মূল্য ২,৫০০–৩,৫০০ টাকা। সবচেয়ে বড় সাইজের পেইন্টিংয়ের দাম শুরু হয় পাঁচ হাজার থেকে। এর চেয়ে বেশি দামের চিত্রকর্মও আছে।
শিল্পীদের অভিজ্ঞতা ও কাজের পরিপক্বতাভেদেও দাম বাড়ে-কমে। ভালোমানের শিল্পীর কাজের মান উন্নত বলে দামও বেশি। দামের এ পার্থক্য ছবিভেদে হতে পারে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা। তবে অনেক কম দামে হাতে আঁকা ছবিগুলোর প্রিন্ট সংস্করণও বিক্রি হয় এসব দোকানে।
ইসলামি ক্যালিগ্রাফিগুলোর মূল্যও আকারভেদে আলাদা। তবে পেইন্টিংয়ের চেয়ে ক্যালিগ্রাফির দাম একটু বেশি। মাঝারি আকারের একটি কিনতে গেলেই আপনাকে খরচ করতে হবে ১,৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা। আর বড় ধরনের কোনো ওয়ালম্যাট কিনতে হলে বাজেট রাখতে হবে দুই হাজার টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে বড় আকারেরটির দাম সর্বনিম্ন ৫,০০০ টাকা।
এসব ছবির আঁকিয়েরা
নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে বিক্রি হওয়া ওয়ালম্যাট এবং সুতোর কাজের চিত্রকর্মগুলোর জন্ম মূলত কারখানায়। ছোট আকারের কিছু ক্যালিগ্রাফি হাতে আঁকা হলেও বেশিরভাগই বানানো হয় প্লাস্টিক দিয়ে, ছাঁচের মাধ্যমে। তাই এগুলোর সঙ্গে শিল্পীর সম্বন্ধ খুব একটা নেই। একই কথা খাটে সুতো দিয়ে তৈরি করা নকশা চিত্রগুলোর ক্ষেত্রেও। নকশাগুলো যে বাহারি এবং নান্দনিক, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ওগুলো তৈরি করে মেশিন — মূলত চীন থেকে আমদানি করে বিক্রি করা হয় দেশের বিভিন্ন মার্কেটে।
তা জলরং বা তেলরং ব্যবহার করে এত সুন্দর পেইন্টিংগুলো কারা আঁকেন? এ প্রশ্ন করাতেই অপ্রতিভ হয়ে গেলেন প্রায় সব দোকানদার। কোনো কথাই বলতে চাইলেন না কেউ কেউ। শেষে নাম না প্রকাশের শর্তে একজন কর্মচারী জানালেন, এ মার্কেটের কিছু স্থায়ী আর্টিস্ট রয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চারুকলা শিক্ষার্থীরাও ছবি এঁকে তাদের কাছে দিয়ে যান। কিন্তু তাদের নাম কেন বলা হচ্ছে না? ওই কর্মচারীর দাবি, অনেক শিল্পী নাকি পরিচয় প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। তার কারণ অনেক চেষ্টা করেও তাদের কাছ থেকে জানা গেল না।
আর্ট কর্নার-এর মালিক ইয়াসিনের বক্তব্যও একই। 'চারুকলার শিক্ষার্থীরা আঁকে। আবার অনেকে আছে শখের বসে শিখছে, ভালো আঁকতে পারে, তারাও এঁকে দিয়ে যায় আমাদের কাছে। আমাদের পছন্দ হলে রেখে দিই,' জানালেন তিনি। কত দামে কেনেন আপনারা? 'তারা শুধু ছবিটা এঁকে দিয়ে যায়। বাকি সবকিছু — বাঁধাই, ফ্রেম তৈরি — সব আমরা করি। তাই তাদের থেকে তো আর বিক্রি দামে কেনা যায় না।'
শিল্পীদের আয় সামান্যই
সম্মান কিংবা সম্মানি, নিউমার্কেটের চিত্রশিল্পীরা দুটোই সামান্যই পেয়ে থাকেন। বাপ্পি আহমেদ ছবি আঁকাকেই একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু ছবি বিক্রি থেকে খুব বেশি আয় করতে পারেন না তিনি। 'ছবিভেদে দেড়শ থেকে ১,৫০০ — এমন আয় করতে পারি। যদি নিজেরা নিজেদের মতো এঁকে দিই, তাহলে দাম কম। কিন্তু দোকানদার তাদের থিম দিলে তখন দাম বেশি রাখতে হয়।'
তবে একজন শিল্পী হিসেবে নিজের কাজের সঠিক মূল্যায়ন পান না বলেই মনে করেন বাপ্পি। তার মতে, আসল লাভটা করে দোকানদারেরা। ১৬ বাই ৩২ সাইজের একটি ছবি আঁকতে রং-তুলি, ক্যানভাস, যাতায়াত খরচ সবমিলিয়ে ২,৫০০ টাকা পড়ে যায়। এ ছবি বিক্রি করি তিন হাজার টাকায়। আজকাল একটা পরিবারের ৫০০ টাকায় কী হয়? বিক্রেতারা আমাদের যে দাম দেন, তার চেয়ে তিন–চারগুণ দামে বিক্রি করেন। পার্সোনাল অর্ডার পেলে একটু বেশি দাম পাই। কিন্তু দোকানদারেরা আমাদের নাম কাউকে জানান না।'
ঢাকা কলেজের সামনে ফুটপাতে মোহাম্মাদ ইয়াসিন ফ্রেম ও পেইন্টিং বিক্রি করেন। তবে তার পেইন্টিংগুলোর বেশিরভাগই প্রিন্ট করা। এগুলো মূলত বাপ্পিদের মতো শিল্পীদের আঁকা ছবি থেকে মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা। এটাই শিল্পীদের সবচেয়ে বড় ক্ষোভের জায়গা। এসবের জন্য বাপ্পি দায়ী করছেন অসাধু ব্যবসায়ীদের, 'বর্তমানে কিছু ব্যবসায়ী আছে যারা আমাদের ছবিগুলো নিয়ে ডিজিটাল প্রিন্ট করায়। কাস্টমার তো বোঝেন না কোনটা চিত্রকর্ম আর কোনটা কাগজ বা কাপড়ে প্রিন্ট করা। একসময় হয়তো দেখা যাবে মানুষ আর হাতে আঁকা ছবিই কিনবেন না।'
তবে শিল্পীদের এ অভিযোগের প্রতিবাদ করলেন রুবিনা আক্তার। তার মতে, শিল্পীর থেকে যখন তারা পেইন্টিং কিনে নেন, তখন শিল্পীর আর বলার কিছু থাকতে পারে না। এমন বক্তব্য মানতে নারাজ বাপ্পি আহমেদ। 'একটা ছবি কিনে যদি আপনি পায়ের নিচে রেখে দেন, সেটা শোভনীয় হবে? আমাদের ছবিগুলো যখন প্রিন্ট করা হয়, তখন অন্যায় কাজই করা হয়। এজন্য আমি এক দোকানদারের বিরুদ্ধে পুলিশের সাহায্য নিয়েছিলাম ২০২২ সালে। তখন তারা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছিল,' বলেন তিনি।
তবে ঢাকার অভিজাত এলাকার আর্ট গ্যালারিগুলোতে যেমন ছবি বিক্রি হলেই কেবল অর্থ পাওয়া যায়, নিউমার্কেট কিংবা ঢাকার অন্যান্য দোকানগুলোতে অর্থ মেলে ছবি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই — ছবি বিক্রি হোক বা না হোক। এটিকে শিল্পীদের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাপ্পি। তবে এটি ফাঁদ হিসেবেও কাজ করে অনেক সময়। 'অনেক দোকানদার আমাদের অগ্রিম টাকা দিয়ে দেয়। সেই টাকা শোধ করতে আমাদের আঁকতে হয়। আঁকা শেষ হওয়ার আগেই টাকা শেষ হয়ে যায়। তখন আবারও টাকার দরকার হয়। এটা একটা ফাঁদ। আমাদের আটকে রাখে, আমাদের বড় শিল্পী হওয়া হয় না, গুলশান-বনানীর শিল্পীও হতে পারি না,' বাপ্পির গলায় দুঃখ।