রাজধানীর সড়ক অবরোধ করে চলছে জামায়াতের মিছিল
মহাসমাবেশে বাধা প্রদান, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ৩দিন ব্যাপী অবরোধের ১ম দিনে রাজধানীতে সড়কপথ অবরোধ জামায়াত নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজার, মহাখালী, সদরঘাট ও উত্তরা এলাকায় মিছিল বের করে দলটি।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৭.৪৫টা থেকে ৮.১০ পর্যন্ত তেজগাঁও-মহাখালী রেলপথ অবরোধ করে জামায়াতের কর্মীরা।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুরুন্নবী মানিক, কামরুল আহসান হাসান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
'জনগণ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেবে না'
"দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ সরকারের একতরফা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ষড়যন্ত্র কোনভাবেই মেনে নেবে না এবং শেখ হাসিনার দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোন নির্বাচনও হতে দেবে না" বলে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
আজ রাজধানীর উত্তরায় রেলপথ অবরোধকালে এসব কথা বলেন তিনি।
অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জামাল উদ্দীন, জামায়াত নেতা মাহবুবুল আলম, মাজহারুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।
রেজাউল করিম বলেন, "আজকের অবরোধ বিনা ভোটের সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ। আজকের অবরোধ আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেলারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্ত করার অবরোধ। আজকের অবরোধ গণমানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার অবরোধ। সর্বোপরি দুর্নীতিবাজ, খুনী ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ জনতার সর্বাত্মক অবরোধ।"
"এই কঠোর অবরোধের মাধ্যমেই ফ্যাসীবাদী, স্বৈরাচারি ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে," বলেন তিনি।
তিনি সরকারকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে গণদাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদের পরিণতি 'শুভ হবে না'।
তিনি বলেন, "দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নৈশ্যভোটের সরকারকে ইতোমধ্যেই লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। জোর করে তাদের পক্ষে আর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। তা উপলব্ধি করতে পেরেই গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের ওপর পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে জনতার যৌক্তিক আন্দোলন কোনভাবেই দমন করা যাবে না বরং বীর জনতা সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটাবে।"
মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি বলেন, "আওয়ামী লীগ সরকার নির্লজ্জ সরকার। তারা একজন বিচারপতিকে দলীয় আখ্যা দিয়ে সারাদেশেই এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে দানবীয় উম্মত্ততায় মেতে উঠেছিল। এখন তারাই আবার নিজেদের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দিবাস্বপ্নে বিভোর। কিন্তু জনগণ তাদের এই পরিকল্পনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।"
তিনি সরকারকে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদেরকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।