শরিকদের বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শরিকদের কাউকে নির্বাচনে বিজয়ের গ্যারান্টি দেবে না আওয়ামী লীগ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই বিজয়ী হতে হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমারও বিজয়ের গ্যারান্টি নেই। আমাকেও চার জনের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। যদি তাদের মধ্যে কেউ জিতে যায়, আমাকে মানতে হবে। এখানে হার-জিতের প্রশ্ন হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।'
ওবায়দুল কাদের আজ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন শরিক দলের যত নেতা আছেন, তাদের সন্তুষ্ট-অসন্তষ্ট হওয়ার কিছু নেই। যার যার প্রতীকেই নির্বাচন করতে পারবে সবাই। তাদের কেউ বাধা দেয়নি, দেবেও না। তাদের সবার এবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। তারা যার যার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। কারও ব্যাপারে কোনও বাধা নেই।
জাতীয় পার্টি ইস্যুতে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে। ১৪ দলে কয়েকটি নৌকা দেব। এরই মধ্যে আমি ১৪ দলের সমন্বয়ককে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। নির্বাচন তারা সবাই করুক, তাদের দলের প্রতীক নিয়ে। ৭টা নির্বাচনি এলাকায় আমরা নৌকার ছাড় দিতে পারব। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠকের বিষয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। সবাই শুধু বিভিন্ন দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলেন। এই সময়টাকে, আমাদের এই অ্যালায়েন্সটাকে আমরা যতটা রাজনৈতিক মূল্য দিচ্ছি, আসনের ব্যাপারটা কম।
টিআইবি বিএনপির শাখা হয়ে গেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে। টিআইবি বলছে এখন বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। টিআইবির কাছে জানতে চাই, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কী বোঝায়। টিআইবি আর বিএনপি একই সুরে কথা বলছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণ। সরকারি দল হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করাই আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। যেকোনো মূল্যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করে রেকর্ড করতে চায় আওয়ামী লীগ।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া ব্যবস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সমর্থন করেছে। নির্বাচন কমিশনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করছে না আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, এবার যেকোনো মূল্যে আমরা সুষ্ঠু অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসাবে একটা রেকর্ড রাখতে চাই। নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশন যে ব্যবস্থা নিচ্ছে আমরা তা মেনে নিচ্ছি। নির্বাচনে জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন। নির্বাচন কেমন হয় তা দেখে লজ্জা পাবে বিএনপি। বিএনপির হ্যাঁ-না ভোটের পুনরাবৃত্তি এই নির্বাচনে হবেনা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন এবার একটা ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এমন একটি নির্বাচন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার। তিনি পরিস্কার করে বলেছেন, দেশ-বিদেশে একটি ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এমন একটি নির্বাচন করবেন। যাতে জনগণ খুশি থাকে। অতীতে বিএনপি নির্বাচনের নামে জনগণকে প্রতারিত করেছে। এখন তা হবে না।
বিজয় দিবসের কর্মসূচির বিষয়ে কাদের বলেন, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে আমাদের কর্মসূচি শুরু হবে। ১৭ ডিসেম্বর আলোচনা সভা হবে। ১৮ ডিসেম্বর বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে। সেদিন একযোগে সারা দেশে বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।