রাফাহ খালি করার আদেশ, কোন নিরাপদ আশ্রয়ে যাবেন জানেন না ফিলিস্তিনিরা
দক্ষিণ গাজার রাফাহয় আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এটি পূর্ব রাফাহর বাসিন্দাদের সরে যাওয়া নির্দেশ দিয়েছে। ফলে এতদিন সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা এখন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।
জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ রাফাহ ছেড়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি এ সংখ্যা তিন লাখের মতো।
'তারা আমাদের তিনবার ডেকেছিল। প্রতিবেশীরা এসে বললেন তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়তে। পুরো এলাকা থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ওরা। আমাদের এখানে কী করা উচিত? সবাই মরা পর্যন্ত অপেক্ষা করব? তাই সবকিছু বিবেচনায় সরে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,' বলেন রাফার বাসিন্দা হানান আল-সাতারি।
দক্ষিণ গাজার আরেক বাসিন্দা ফাতেন লাফি বলেন, 'দখলদার বাহিনী আমাদের হুমকি দেওয়ার পর আমরা এখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছি। তারা রেকর্ড করা ফোনকল আর ফেসবুকে একটা পোস্টের মাধ্যমে এ হুমকি দিয়েছে। কোথায় যাচ্ছি জানিনা। কোথাও নিরাপদ নয়।'
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, রাফায় তাদের অভিযান সীমিত পরিসরে হবে। তবে আল জাজিরা'র সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত হয়েছে।
তিনি জানান, বিমান হামলা ও তীব্র বোমাবর্ষণ রাফাহ শহরের কেন্দ্রস্থল এবং কেন্দ্রের দক্ষিণাংশে এখন ছড়িয়ে পড়েছে। আর তার কাছেই কুয়েতি হসপিটালে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাফাহ খালি করার ইসরায়েলি এ আদেশের ফলে অনেক ফিলিস্তিনি এখন জানেন না তারা কোথায় যাবেন। কারণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্ধারণ করে দেওয়া তথাকথিত 'সেফজোন'গুলোতেও হামলা চালানোর একাধিক নজির রয়েছে।
অনেকে রাফাহ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও অনেক মানুষ তীব্র বোমাবর্ষণের কারণে শহর ছাড়তে পারছেন না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি নিহত হন। নিহতের সংখ্যা আগে ১,২০০ উল্লেখ করা হলেও এখন তা সংশোধন করা হয়েছে। হামলার পাশাপাশি হামাস কয়েক ডজন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে, যাদের অনেকে এখনো সশস্ত্র গোষ্ঠীটির হাতে বন্দি।
ওই হামলার পর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল পালটা অভিযান অব্যাহত রেখেছে। দেশটির হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৯৭১ জন নিহত ও ৭৮ হাজার ৬৪১ জন আহত হয়েছেন।