ঘূর্ণিঝড়ের বিপৎসংকেতের মধ্যে অন্তত ৮০ যাত্রী নিয়ে মোংলায় ট্রলার ডুবি, শিশুসহ নিখোঁজ দুই
১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের মধ্যেই বাগেরহাটের মোংলা নদীতে অন্তত ৮০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে গেছে। রোববার (২৬ মে) সকাল সোয়া ৯টার দিকে মোংলা নদীর ঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নদীর পাড়ে এসে ডুবে যাওয়া ট্রলারের বেশিরভাগ যাত্রী তীরে উঠতে পারলেও শিশুসহ দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল তল্লাশি চালাচ্ছে। এ ঘটনার পর থেকে বন্ধ রয়েছে ট্রলার চলাচল।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার ভোর থেকেই ট্রলারে করে শত শত যাত্রী পার হয়েছে। ট্রলারে যাত্রী বহনে নির্দিষ্ট সংখ্যার নিয়ম থাকলেও চারগুণ যাত্রী নিয়ে বিপৎসংকেতের মধ্যে যাত্রী পারাপার করিয়েছেন ট্রলার চালকেরা। প্রত্যেকটি ট্রলারে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন যাত্রী ছিল। যাত্রীদের অধিকাংশই ইপিজেডের 'ভিআইপি' নামক একটি কারখানার কর্মরত শ্রমিক।
দূর্ঘটনার পর খবর পেয়ে ছুটে আসেন ডুবে যাওয়া ট্রলার যাত্রীদের স্বজনেরা। এসময় তারা পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে থাকা টোল আদায়ের কাউন্টারে ভাঙচুর চালান। এ ঘটনার পর থেকে মোংলা নদীতে ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
ঝড়ের মধ্যে ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের বিষয় জানতে চাইলে মোংলা নদী পারাপার ট্রলার মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল বলেন, 'যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে লাফিয়ে জোরপূর্বক ট্রলারে ওঠে পড়লে আমাদের কিছু করার থাকেনা, নিষেধ করলেও শোনেন না তারা।'
এদিকে মহাবিপৎসংকেতের মধ্যেও ইপিজেডের ভিআইপি কারখানা খুলে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে, ভিআইপি কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান দাবি করেন, ১০ নম্বর মহবিপৎসংকেত জারি হওয়ার পরই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাহলে সকালে কারখানায় যাওয়ার জন্য কেন শ্রমিকেরা নদী পার হচ্ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ঝড়ের পরিস্থিতি এমন হবে জানা ছিল না। তারপরেও যারা আহত হয়েছে তাদের দেখতে হাসপাতালে যাওয়া হয়েছে। আমরা খোঁজখবর রাখছি তাদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য।'
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, 'ঝড়ের মধ্যে ভিআইপি কারখানার মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আমাদের ফোন দিয়ে কারখানায় যেতে বলেছেন। আমরা পেটের তাগিদে এই ঝড়ের মধ্যে ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হয়েছি।'
মোংলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, 'দুজন যাত্রী নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি, ট্রলার দুর্ঘটনার পর খোঁজখবর রাখছি। কোনো যাত্রী নিখোঁজ আছে কিনা সে বিষয়ে পৌরসভার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।'