আগুনে পুড়েছে ২ টোল প্লাজা, বন্ধ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কবে চালু হবে অনিশ্চিত
মহাখালী ও বনানী টোল প্লাজায় আগুন দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল। গত ১৮ ও ১৯ জুলাই এ দুটি টোল প্লাজায় আগুন দেওয়া হয়। এ সময় টোল প্লাজা দুটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ দুই টোল প্লাজা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ চালু হতে পারে, তা-ও বলতে পারছেন না তারা।
সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মনজুর হোসেন বলেন, আলাদা একটি কোম্পানি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যবস্থাপনা করে।
'তারা আমাদের যেটি জানিয়েছে, এ দুটি টোল প্লাজা ছাড়াও অন্যান্য স্থানে সেফটি ও সিকিউরিটি নিশ্চিত করে তারপর চালু হবে,' বলেন তিনি।
এক্সপ্রেসওয়ে কবে নাগাদ ফের চালু হবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনজুর হোসেন বলেন, 'আমরা কোম্পানির কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তারা আমাদের জানিয়েছে, আপাতত চালু করতে পারছে না।'
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আখতার বলেন, কারফিউ ও এক্সপ্রেসওয়ে চালুর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। 'আমরা যত দ্রুত সম্ভব এক্সপ্রেসওয়ে ফের চালু করার চেষ্টা করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেক বিদেশি এক্সপ্রেসওয়ে পর্যবেক্ষণে কাজ করেন। প্রথমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।'
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনানী টোলপ্লাজার মুখে প্রতিবন্ধক দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। চারটি টোল বুথসহ পুরো প্লাজা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙা গ্লাস, পোড়া প্লাস্টিক। বুথগুলোর মেশিনগুলোও লুটপাট করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে একদল বিক্ষোভকারী এসে এ টোল প্লাজায় আগুন দেয়।
ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের সময় সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্ব পালন করছিলেন ফজলুল হক। তিনি টিবিএসকে বলেন, ২০-২৫ জন মানুষ এসে আগুন দেয়। আশপাশে ৪০০-৫০০ মানুষ ছিল।
বনানীর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা মহাখালী টোল প্লাজার। শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে এখানে আগুন দেওয়া হয়। পাঁচটি টোল বক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। সবগুলো মেশিন লুট করা হয়েছে। এর পাশে থাকা এক্সপ্রেসওয়ের একটি ভবনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
তখন মহাখালী টোল প্লাজার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মো. সাকিব টিবিএসকে বলেন, ২০০-৩০০ মানুষ এখানে ভাঙচুর চালায়। এরপর আগুন দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা আগুন জ্বলে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে আশপাশের ভবনগুলোতেও এর প্রভাব পড়ে।
এ দুটি টোল প্লাজায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান প্রকল্পটির পরিচালক এএইচএম সাখাওয়াত আখতার।
তিনি টিবিএসকে বলেন, 'আমরা পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোম্পানির সাথে কথা বলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার চেষ্টা করব।'
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছের কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক। পুরো উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার দূরত্ব অংশ উদ্বোধন করা হয়। গত ২০ মার্চ বিএফডিসি গেট-সংলগ্ন নামার র্যাম্প যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।