শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের বিক্ষোভ
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে শিক্ষার্থী হত্যা, নিপীড়ন ও গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে হয়রানির প্রতিবাদে মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে থেকে প্যারিস রোডে জড়ো হন শতাধিক শিক্ষক। পরে তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে আসেন। সেখানে তারা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, যেভাবে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে, তা কোনো বিবেকবান শিক্ষক মেনে নিতে পারেন না। ছাত্রদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে আমরা সড়কে দাঁড়িয়েছি। আর যেন কোনো ছাত্র হত্যা না হয়। সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো খুলে দেওয়ারও দাবি জানান তারা।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, 'কোনো নৈতিক সরকার এভাবে নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পারে না। দ্রুত এই দমন-পীড়ন বন্ধ করে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে দেন এবং সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করেন।'
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, 'যেভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের ওপর আক্রমণ করে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, তার জন্য সম্পূর্ণ সরকার দায়ী। এখন আবার নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি করা শুরু হয়েছে। আমরা প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক দলমত নির্বিশেষে ছাত্রদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'আমরা চাই অবিলম্বে গণগ্রেপ্তার বন্ধ হোক। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন।'
শিক্ষকদের কর্মসূচির বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি শেষ করেছেন। আমরাও সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। কোনো ধরনের সংঘাত সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। রাজশাহীর পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।'
তিনি বলেন, 'এ পর্যন্ত রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় নাশকতার সাতটি মামলায় ২০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি যারা মদদ ও অর্থের জোগান দিচ্ছে, আমরা তাদের তথ্য নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'