আমাদের সন্তানদের গুলি থেকে বাঁচাতে আদালতে এসেছি: আইনজীবী মনজুর আল মতিন
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা ও আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি অফিস থেকে মুক্তির দাবিতে রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজুর আল মতিন বলেছেন, "যে পারে, এই গুলিটা যেন থামানোর চেষ্টা করে। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য হাইকোর্টে এসেছি।"
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) হাইকোর্টে শুনানি শেষে গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন এই মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী।
এদিকে, আজ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রাখা বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর, এবং তথাকথিত নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, "তারা তো নিরাপত্তা চায়নি। এভাবে তাদেরকে আটক রাখা আইনবহির্ভূত। হয় তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে, আর নাহয় তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করতে হবে।"
এর আগে গতকাল (২৯ জুলাই) সকালে জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা ও মনজুর আল মতিন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
মনজুর আল মতিন গণমাধ্যমকে বলেন, "সোমবার সকাল সোয়া ৯টায়, যে দিন আমরা রিট পিটিশন করলাম, আইনজীবী আইনুন নাহার লিপি বললেন— বাচ্চারাতো আবার রাস্তায় নেমেছে, পুলিশ আবার গুলি করবে, আমরা কি কিছু করতে পারি না? এই একটা প্রশ্ন থেকে, আইনজীবী হিসেবে দায়বন্ধতা থেকে আমরা এসেছি। আধা ঘণ্টার মধ্যে পিটিশন ড্রাফট করে নিয়ে এসেছি আমরা।"
"আমরা বলেছি, যেভাবে পারি, যে পারে যেন এই গুলিটা থামানোর চেষ্টা করা হয়। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্যই আদালতে এসেছি," যোগ করেন তিনি।
রিটের শুনানির সময় হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, "গত কদিনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। আমরা কেউই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছি না। পুলিশ কী আচরণ করবে, তা সিআরপিসিতে পরিষ্কার বলা আছে।"
আদালত আরও বলেন, "সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা লজ্জিত।"
আজ শুনানি শেষে আদালত আগামীকাল (৩১ জুলাই) শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।