বিচারপতি এখনও অসুস্থ, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর রিটের শুনানি আজও হচ্ছে না
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা ও কোটাবিরোধী আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানি আজ বৃহস্পতিবারও (১ আগস্ট) স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও আবেদনের শুনানিকারী হাইকোর্ট বেঞ্চের জুনিয়র বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন অসুস্থ হয়ে পড়ায় শুনানি স্থগিত করা হয়।
তিনি আজও ছুটি নেওয়ায় শুনানি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত সূত্র।
২৯ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়।
জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা ও মনজুর আল মতিন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের শুনানি করেন।
শুনানির সময় হাইকোর্ট বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রাখা বেআইনি।
পাশাপাশি রিটের শুনানির সময় হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, 'গত কয়েকদিনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। আমরা কেউই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছি না। পুলিশ কী আচরণ করবে, তা সিআরপিসিতে পরিষ্কার বলা আছে।'
আদালত আরও বলেন, 'সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা লজ্জিত।'
এর আগে হাইকোর্ট ডিবি কার্যালয়ে ছয় সমন্বয়কের খাবার খাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
ছয়জন সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানির একপর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেছিলেন, 'গতকাল টিভিতে দেখেছি, এই ছয়জন (সমন্বয়ক) কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।'
একপর্যায়ে আদালত বলেন, 'কাউকে আটক করে ডিবি অফিসে নিয়ে খাবার খাওয়াচ্ছেন, সেসবের ছবি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানান মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি কি জাতির সাথে মশকরা নয়? এটি আপনাদের কে করতে বলেছে? ডিবি অফিসে যাকে ধরে নিয়ে যান, তাকেই খাবার টেবিলে বসান। এভাবে জাতিকে নিয়ে মশকরা করবেন না।'