কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কোটা সংস্কারের জন্য ছাত্রদের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশব্যাপী সাম্প্রতিক সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তারা (জামায়াত-শিবির ও বিএনপি) ছাত্রদের শুধু ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।'
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নূরএলাহি মিনা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সহিংসতার পর চিকিৎসা নেওয়া আহতদের দেখতে তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে গেছেন। 'আমরা সবাইকে সমানভাবে চিকিৎসা সুবিধা দিচ্ছি।'
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে।
তিনি বলেন, সারা দেশ ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এসেছে। এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেল স্টেশনের ভাঙা টোল প্লাজাগুলোর সেবা চালু করতে কিছুটা সময় লাগছে।
ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, নৈরাজ্যবাদীরা বাংলাদেশের আধুনিকায়নের প্রতীকগুলোকে টার্গেট করেছে।
তিনি জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে শোক প্রকাশ করেছেন।
মিনা বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী এসব ভাঙচুরের পেছনে থাকা অপরাধীদের বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত।'
হলি আর্টিজানে হামলার পর সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের পদক্ষেপ ও সাফল্যের প্রশংসা করেন তিনি।
ইতালির রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে মিনা বলেন, 'হলি আর্টিজানের ঘটনার মতো ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে সন্ত্রাসবাদ দমন করতে বাংলাদেশ সক্ষম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।'
সাম্প্রতিক হামলা ও ভাঙচুর মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় দুই লাখেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি এই সম্পর্কের সেতুবন্ধন এবং তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
আলেসান্দ্রো বলেন, দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, জ্বালানি, এসএমই, মহাকাশ প্রযুক্তি ও জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রগুলো এই ক্ষেত্রের কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।
তিনি ইতালিতে বৈধ অভিবাসনের বিষয়টি এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তার দেশের পুলিশ সদস্যদের বিশাল অভিজ্ঞতা থাকায় বিক্ষোভ ও দমন-পীড়নের মতো বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশকে 'স্কুল অব পাবলিক অর্ডার'-এ প্রশিক্ষণ দিতে তার দেশের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি একটি ভালো প্রস্তাব উল্লেখ করে বলেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।