একটি প্রতিবাদের আলোকচিত্র থেকে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের আলোচিত স্কেচ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বর্তমানে দেশের অনেক স্থানে পুলিশ শিক্ষার্থীদের যত্রতত্র গ্রেপ্তার বা আটক করছে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছেন আটক হওয়া তাদের সহপাঠীকে ছাড়িয়ে নিতে।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকও তাদের শিক্ষার্থীদের পুলিশের হাতে আটক হওয়া রোধ করতে রাস্তায় নেমেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক পুলিশের কাছ থেকে এক শিক্ষার্থীকে ছাড়ানোর সময় হাতে আঘাতও পান।
শিক্ষার্থীদের আটকের এসব ঘটনার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেরকমই একটি ছবিকে স্কেচ হিসেবে এঁকেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
মূল ছবিতে একটি পুলিশ ভ্যানের সামনে এক তরুণীকে দৃপ্ত ও সাহসী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বাধা দিতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট অনুযায়ী, ওই তরুণী তার ভাইকে পুলিশের নিয়ে যাওয়া ঠেকাতে প্রিজন ভ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ ছবিকেই সাদা-কালো রংয়ের স্কেচ তৈরি করে ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছেন।
এরপর আলোচনায় এসেছে স্কেচটি। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত স্কেচটিতে তিন হাজারের বেশি মানুষ 'রিয়্যাকশন' দেখিয়েছেন। ২৪৫টি মন্তব্য করা হয়েছে ছবির নিচে। আর সাড়ে ৫০০ বারের বেশি শেয়ার হয়েছে স্কেচটি।
স্কেচটি দেখে ১৯৮৯ সালে বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে হওয়া বিক্ষোভে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির কথা মনে পড়েছে বলে মন্তব্যের ঘরে জানিয়েছেন শামসুল খান নামক একজন ব্যবহারকারী।
'অসাধারণ! সাহসী মেয়েটার প্রতিরোধের এ ছবিটা আমাকে অনেক বছর আগে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ট্যাংকের সামনে দাঁড়ানো সে ছাত্রটার কথা মনে করিয়ে দিলো,' লেখেন তিনি।
মন্তব্যের উত্তরে ওয়াহিদউদ্দিন জানান, বাংলাদেশের আন্দোলনের এ প্রতিবাদকারী মেয়েটির ছবি দেখে তারও একই কথা মনে হয়েছিল।
চিত্রকর্ম হিসেবে স্কেচের প্রশংসার পাশাপাশি অনেক ব্যবহারকারী চলমান আন্দোলনে এ বুদ্ধিজীবীর এভাবে 'সংহতি' জানানোকে স্বাগত জানিয়েছেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'স্যার, রাস্তায় আসুন। দেখবেন আপনার বয়স অনেক কমে গেছে! আত্মা ভরে যাবে!'
সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকসহ শতাধিক মানুষ নিহত ও অসংখ্য আহত হয়েছেন।
২৯ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ওই দিন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ১৫০ জন। তবে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এ সংখ্যা ২০০-এর বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের লেখা কলাম পড়ুন এ লিংক থেকে।