দুধ নয়, মাখন তৈরি হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে!
বাতাস থেকে তৈরি হচ্ছে মাখন! শুনতে অদ্ভুত লাগলেও, এমনটাই দাবি করছে ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ (উদ্যোক্তা) দল।
স্যাভর নামের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাতাসে বিদ্যমান পরমাণুকে কাজে লাগয়ে বিকল্প দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি করার চেষ্টা করছে তারা। ইতিমধ্যে প্রাণিজ চর্বি মুক্ত মাখন তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বিশেষ থার্মোকেমিক্যাল প্রক্রিয়া ব্যবহার করে প্রাণিজ চর্বিমুক্ত আইসক্রিম, পনির ও দুধের বিকল্প তৈরি করতে কাজ করছে স্যাভর। এ প্রক্রিয়ায় বাতাস থেকে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণু একত্রিত করে ফ্যাট অণু তৈরি করা হয়। একই অণু আমরা প্রাণিজ দুধ থেকে পাই।
বিকল্প মাখন থেকে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণও বেশ কম। আসল মাখনের প্রতি ক্যালোরিতে ২.৪ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকলেও স্যাভরের মাখনে এর পরিমাণ মাত্র ০.৮ গ্রাম।
প্রাণিজ চর্বি জলবায়ুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবারের ব্যবহার কমানো পরিবেশগত প্রভাব কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। কারণ প্রাণিসম্পদ উৎপাদন গ্রিনহাউজ গ্যাসের বড় উৎস।
স্যাভরের প্রধান নির্বাহী ক্যাথলিন আলেকজান্ডার বলেন, আমরা এখনও প্রাক-বাণিজ্যিক পর্যায়ে আছি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষা করছি। ২০২৫ সালের আগে আমরা কোনো বিক্রয়ের আশা করছি না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিকল্প দুগ্ধজাত পণ্য ও মাংসের চাহিদা বাড়লেও এর স্বাদ নিয়ে সন্তুষ্ট না অনেকে। তবে স্যাভর বলছে তাদের এ মাখনের স্বাদ আসল মাখনের মতোই। তবে আসল দুগ্ধ এবং মাংস রেখে ক্রেতারা নতুন এই বিকল্পগুলোতে ঝুঁকবেন কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।
প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগদাতা মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এক ব্লগ পোস্টে বিল গেটস বলেন, ল্যাবে তৈরি চর্বি ও তেল অস্বাভাবিক মনে হলেও এগুলো আমাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট (কার্বন নিঃসরণ) ব্যাপকভাবে কমাতে পারে। এই প্রযুক্তি গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপাদন করে না, কৃষিজমি ব্যবহার করে না এবং কম পানি ব্যবহার করে। এছাড়াও, এটি আসল জিনিসের মতোই স্বাদযুক্ত।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, দুগ্ধ এবং মাংস উৎপাদনসহ গবাদি পশুর চাষ, বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশের জন্য দায়ী।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন