শেখ হাসিনার আগেই আওয়ামী লীগের যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের আগেই আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা, আইনপ্রণেতা ও মন্ত্রী দেশ ছাড়েন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার (৪ আগস্ট) রাতে দেশত্যাগ করেন। কিছু সূত্র টিবিএসকে বলেছে, তিনি নয়াদিল্লি যাচ্ছিলেন।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানও রোববার রাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে তার কাছের কয়েকজন জানিয়েছে। তবে তিনি কোন দেশে যাচ্ছিলেন তা নিশ্চিত করতে পারেনি সূত্রগুলো।
রোববার সকালে বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন শেখ হাসিনার আত্মীয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হন বলে বিমানসূত্রে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের বিতর্কিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমানও গত সপ্তাহের শেষের দিকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
একাধিক সূত্র টিবিএসকে জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
পরে তিনি প্রতিবেশী ভারত সীমান্তের একটি স্থলবন্দর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত টিবিএস তার অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব জানান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার মোবাইল ফোন দুটি বন্ধ করে দেশত্যাগ করেছেন। তিনি আরও বলেন, 'সোমবার সকাল থেকে তাকে ঢাকায় পাওয়া যায়নি।'
সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী রাজধানীর বনানীর বাসায় অবস্থান করেন। তবে রাতেই তার দেশত্যাগ করার কথা রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুলিশের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জনসমাগম এড়িয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই নিজ বাসা বা সরকারি বাংলোতে না গিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা, যারা ঢাকায় রয়েছেন বা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেননি, তারা নিজ নিজ বাসায় না গিয়ে স্বজনদের বাসায় অবস্থান করছেন।
এছাড়া রোববার বিদেশ ভ্রমণ করার কথা ছিল, এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা পেয়েছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
এ তালিকায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ মো. নূর-ই-আলম চৌধুরী, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
এছাড়াও, আরও বেশ কয়েকজন ভিআইপি এবং সিআইপির রোববার ভিআইপি লাউঞ্জের মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণের কথা ছিল বলে বিমানসূত্রে জানা গেছে।