ব্যাংক দখল ও ৮০০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু
পদ্মা ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, নাফিজ সরাফাত পুলিশ ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তায় পদ্মা ব্যাংক দখল করেছিলেন।
এছাড়া নাফিজের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার থেকে ৮০০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, দুদক ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
নাফিজ সরাফাত সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেইস-এর মালিকানাতেও আছেন। এর পাশাপাশি তার বিদ্যুৎ কোম্পানি, তারকা হোটেল ব্যবসা, মোবাইলের টাওয়ার কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যমসহ নানা ব্যবসা আছে।
নাফিজ সরাফাত পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন।
দ্য ফারমার্স ব্যাংক নামে ২০১৩ সালে পদ্মা ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় ২০১৭ সালে পদত্যাগ করেন ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ওই বছরই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৯ সালে ব্যাংকটির নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক।
কিন্তু নাফিজ সরাফাত দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়মের কারণে ২০১৮ সালের প্রথমদিকে সরকারের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। ব্যাংকটিকে বাঁচাতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দেয়।
কিন্তু পদ্মা ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারায় সহায়তা দিয়েও ব্যাংকটির মূলধন ক্ষয় ঠেকানো যায়নি। ২০২৩ সালের শেষে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ দারায় ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণই ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। ফলে ঋণ থেকে যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে আমানতের সুদ পরিশোধ করা যাচ্ছে না।