সেমি-ফাইনালে ওঠার ম্যাচে সাঈদ-মুগ্ধকে স্মরণ মিরাজুলের
দারুণ পাসিং ফুটবলে ম্যাচজুড়ে দাপটের সঙ্গে খেলে বাংলাদেশ। আধিপত্য ধরে রেখে অবিরত আক্রমণে প্রতিপক্ষকে হাঁপিয়ে তোলে তারা। এরপরও অবশ্য প্রত্যাশিত ফল আসেনি আক্রমণভাগের ব্যর্থতায়। বেশ কিছু আক্রমণ নষ্ট হয়েছে, তবে জয়ের হাসি হেসেছে বাংলাদেশই। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে উঠেছে তারা।
মঙ্গলবার নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮তম মিনিটে দলের হয়ে প্রথম গোল করেন মিরাজুল ইসলাম। ৮৫তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান পিয়াস আহমেদ নোভা। বাংলাদেশের শুরুর গোলটি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধকে স্মরণ করেন মিরাজুল।
একটি করে জয় পেয়েছে স্বাগতিক নেপাল ও বাংলাদেশ, দুই দলেরই ৩ পয়েন্ট। 'এ' গ্রুপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে আগামী বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে এই দুই দল। টানা দুই হারে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মিরাজুল। নেপালের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন রাব্বী হোসেন রাহুল। তার বাড়ানো আড়াআড়ি ক্রস থেকে টোকায় বল জালে জড়ান মিরাজুল। গোলটি করে সাঈদ ও মুগ্ধের প্রতি সম্মান জানান তিনি।
তরুণ এই ফুটবলারের উদযাপনে ছিল ভিন্নতা, গোল করে জার্সির উপরে আলাদা একটি টি-শার্ট পরেন তিনি। যেখানে লেখা ছিল ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারানোদের জন্য স্মৃতিচারণমূলক বার্তা। টি-শার্টে লেখা ছিল, 'মুগ্ধ এবং আবু সাঈদ এর স্মরণে, মনে রেখ যুদ্ধ করে, রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি?'
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদ। পুলিশের সামনে একাই বুক টান করে দাঁড়ান তিনি, একপর্যায়ে গুলি করা হয় তাকে। ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী মুগ্ধও গুলিতে নিহত হন।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে জার্সি বা শরীরের কোথাও বার্তা বহন করার নিয়ম নেই। এটাকে 'অপরাধ' হিসেবে বিবেচনা করা হয়, দেখানো হয় হলুদ কার্ড। এমন উদযাপনের পর মিরাজুলকেও হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এটা জেনেই বিশেষ উদযাপনে সাঈদ ও মুগ্ধকে স্মরণ করেছেন মিরাজুল।