সিকিমে পাহাড়ধসে ভেঙে পড়ল তিস্তা প্রকল্পের একাংশ
গত কয়েকদিন ধরে সিকিমে বারবার ধস নামছে। এর জেরে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে বালুতারে গত কয়েকদিনে সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে। এখানেই তিস্তা নদীর উপর বাঁধ দিয়ে ৫১০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎপ্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ডয়চে ভেলেকে (ডিডাব্লিউ) জানিয়েছেন, এদিন পাহাড়ের উপর হঠাৎ কম্পন হয়। এরপর হুড়মুড় করে গাছপালাসহ পাহাড়ের একটি অংশ ধসে পড়ে। সেই ধস গিয়ে পড়ে বাঁধের উপর। সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের একটি অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। চিৎকার করতে করতে আশেপাশের মানুষ পালাতে থাকেন।
সিকিমে তিস্তার উপর একাধিক বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। এরপর পশ্চিমবঙ্গেও গাজলডোবায় তিস্তার উপর বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
এদিন বালুতরে যে জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে, সেটি নির্মাণ করেছিল ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন। তিস্তার উপর স্টেজ ফাইভ বাঁধ তৈরি করেছিল তারা। সেই বাঁধটি এদিন ভেঙে যায়।
এর আগে গত বছর মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছিল চুংথাংয়ে তৈরি আরেকটি বাঁধ। এখনো সেই বাঁধ পুরোপুরি ঠিক করা যায়নি। এদিন যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গও তৈরি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
পরিবেশবিদ অরূপ গুহ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, 'এমন যে হবে সে আশঙ্কা ছিলই। পাহাড়ে এবং ডুয়ার্সে তিস্তার উপর একের পর এক প্রকল্প তৈরি হয়েছে। নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। পরিবেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখন বোঝা যাচ্ছে।'
ডয়চে ভেলেকে একটি সাক্ষাৎকারে অরূপ আগেই জানিয়েছিলেন, তিস্তার উপর তৈরি বাঁধগুলির মেয়াদকাল পূর্ণ হতে চলেছে। অথচ সম্পূর্ণ প্রকল্পই এখনো রূপায়ন হয়নি। ফলে যে কোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এদিনের বিপর্যয় তারই এক ইঙ্গিত।
এদিকে এদিনের ঘটনার ফলে গাজলডোবায় চাপ পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ সিকিমে প্রবল বৃষ্টিও হচ্ছে। তিস্তায় জল অনেক। গাজলডোবা জল ছাড়লে তার নীচের অংশে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।