মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
বৃষ্টির পানি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজারের বিস্তৃর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বন্যা। ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে সিলেট ও হবিগঞ্জেও নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলার পাঁচটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী, মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
জেলা সদর, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকেই ধলাই, লাঘাটা, ক্ষীরণী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এরফলে পাহাড়ি ছড়ার পানি উপচে ধলাই নদীতে পড়তে শুরু করে। ধলাই নদীর চারটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ সদর, আলীনগর, শমশেরনগর, পতনঊষার, মুন্সিবাজার, রহিমপুর এবং পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পরেছে উপজেলার সব কটি ইউনিয়নে। এতে গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম সঙ্কটে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠে, ঘাটে, ক্ষেতে পানি ওঠায় চরম গোখাদ্য সংকটে পড়ছেন তারা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইসলামপুরে ২০টি, আদমপুরে ২০টি, শমশেরনগরে ২০টি গ্রাম, মুন্সিবাজারে ২৬টি গ্রাম, পতনঊষারে ১৬টি, আলীনগরে ১৬টি, রহিমপুর, সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার আরো প্রায় ২৫টি গ্রাম বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, 'কমলগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারিভাবে ৬০ মেট্রিকটন জিআর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণের জন্য নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।'
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, 'উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বন্যার কবলে পড়েছে। প্রয়োজনীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। বরাদ্ধ এসেছে, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুকনো খাবার বিতরণও শুরু হয়েছে।'
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, 'উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পানিবন্দিদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।'