নরওয়েতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল রুশ ‘গুপ্তচর তিমি’
নরওয়ের উপকূলে সন্দেহভাজন রুশ গুপ্তচর হিসেবে প্রশিক্ষিত একটি বেলুগা তিমিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
হলদিমির নামের তিমিটির মৃতদেহ নরওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রিসাভিকায় ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিমিটিকে নিকটস্থ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পাঁচ বছর আগে প্রথম তিমিটিকে নরওয়ের সমুদ্রে দেখা যায়। সে সময় এটির সাথে একটি গোপ্রো ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেটির গায়ে 'সেন্ট পিটার্সবার্গের যন্ত্র' লেখা ছিল।
এতে তখন গুজব ছড়িয়েছিল, এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি একটি গুপ্তচর তিমি হতে পারে। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে বিশেষজ্ঞরা তখন জানিয়েছিলেন। তবে মস্কো কখনোই এ ধরনের অভিযোগের কোন জবাব দেয় নি।
মেরিন মাইন্ড নামের একটি সংগঠন হলদিমিরের নিথর দেহটি আবিষ্কার করে। সংগঠনটি বছরের পর বছর ধরে তিমিটির গতিবিধি অনুসরণ করছিল।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্টিয়ান স্ট্র্যান্ড বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, তিমিটির মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা। এমনকি সেটির দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
তিনি বলেন, "আমরা তিমিটির দেহাবশেষ উদ্ধার করতে পেরেছি। সেটির মৃত্যুর কারণ জানার জন্য ভেটেরিনারি ইন্সটিটিউট থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। তাই সেটিকে বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানে রাখা হয়েছে"।
হলদিমিরের আনুমানিক বয়স ১৫ বছর হতে পারে। যদিও একটি বেলুগা তিমির জন্য এটা তেমন কোন বয়স নয় কারণ এ ধরনের তিমি ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
২০১৯ সালের এপ্রিলে ইনগয়া দ্বীপের কাছাকাছি প্রথম তিমিটিকে দেখা যায়। যা রাশিয়ার উত্তর নৌ বহর মুরমানস্ক থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এ ঘটনা সে সময় সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল কারণ নর্দার্ন আইল্যান্ডের এতো দক্ষিণে এ ধরনের বেলুগা তিমি খুব কমই দেখা যায়। নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থা ঐ সময় এ ঘটনা তদন্ত করেছিল।
পরে সংস্থাটি জানিয়েছিল, তিমিটি রুশ সেনাবাহিনী থেকে প্রশিক্ষিত বলে মনে হচ্ছে কারণ সেটি মানুষের সাথে মিশতে অভ্যস্ত।
স্থানীয়ভাবে তিমিটিকে হলদিমির বলে ডাকা হতো। 'হল' একটি নরওয়েজিয়ান শব্দ, যেটি মূলত 'হোয়েল' বা তিমি শব্দটিকে বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
একইসাথে রুশ প্রেসিডেন্টের নামও যেহেতু ভ্লাদিমির পুতিন, তাই তার নামের সাথে মিলিয়ে তিমিটিকে ঐ নামে ডাকা হত।
সামরিক উদ্দেশ্যে সমুদ্রের স্তন্যপায়ী প্রাণী, যেমন ডলফিনকেও প্রশিক্ষণ দেয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে রাশিয়ার।
হলদিমিরকে রুশ সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি রাশিয়া কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি করেনি।
সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের অতীতে গুপ্তচর হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে– এমন কোনো কর্মসূচির অস্তিত্বই রাশিয়া অস্বীকার করেছে।