প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনুরোধ ব্যবসায়ীদের
শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তারা এ অনুরোধ জানান।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের জেরে শতাধিক কারখানা বন্ধের পর ব্যবসায়ী নেতাদের পক্ষ থেকে এ অনুরোধ জানানো হলো। বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতাদের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, সরকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতারা সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা তুলে ধরেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্য ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, 'সম্প্রতি দেশের শিল্প খাতে একধরনের অস্থিরতা চলছে। ওষুধ শিল্প থেকে শুরু করে এই অস্থিরতা টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসব তুলে ধরেছি। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, সবাই পরিবর্তন চায়। তবে এখন যা হচ্ছে, তা কাম্য নয়।
বৈঠকের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, ব্যবসায়ী নেতারাও বলেছেন তারা আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের দাবি পূরণ করবেন। বৈঠকে 'বহিরাগতদের' উসকানি ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে।
ব্যবসায়ী নেতারা আরও জানান, এ ধরনের পরিস্থিতি চলতে থাকলে মালিকপক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে। আর এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, মীর নাসির হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে গাজীপুরে প্রায় ৪৫টি এবং সাভার ও আশুলিয়ায় ৫৯টি কারখানা বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখতে হয়েছে। তিনটি কারখানা ভাঙচুর ও অন্তত দুটি কারখানায় লুটপাট হয়েছে।
উল্লেখ্য, আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে গতকাল বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রত্যাশী শ্রমিকরা। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড তৈরি করে অবরোধ করেন ও বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
পরিস্থিতিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থিত অন্তত ৩০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ অভিযান পরিচালনার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
বৈঠকে বিশৃঙ্খলায় জড়িত বহিরাগতদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আজ থেকে সব কারখানা চালু রাখতে মালিকদের অনুরোধ জানান তিনি।