কর্মবিরতি প্রত্যাহার: ২৩ ঘণ্টা পর সেবা দিতে শুরু করেছেন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা
আসামিদের গ্রেপ্তারের ৭২ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের সভাপতিত্বে সকাল ১১ টায় জরুরি সবার শেষে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান।
২৩ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এতে রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বহির্বিভাগে অন্তত তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে গেছেন। এছাড়া এটি ১০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এর অন্তঃবিভাগে ৩০৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। সেখানেও ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা।
শরীয়তপুর পৌরসভার আটং এলাকা থেকে এসেছিলেন ৭৫ বছর বয়সী হাজরা বেগম। লাঠি ভর দিয়ে তিনি হাসপাতালের আউটডোরে এসে চিকিৎসকের অপেক্ষা করেন। কিন্তু টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যান তিনি। এ সময় তিনি দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা গরিব মানুষ বাবা। বাড়ি থেকে হাঁটতে হাঁটতে এসেছি। সরকারি একটু চিকিৎসা পাব, ওষুধ পাব কিন্তু সকাল থেকে বসে আছি ডাক্তারও নাই আর ওষুধের ঘরও বন্ধ। শরীরের অসুস্থতা নিয়ে আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কবে হাসপাতাল খুলবো কেউ কিছু বলতে পারলো না।"
তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান জানান, রোগীদের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। কর্ম কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরেছেন ইচ্ছুক কর্মচারীরা। তবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আবারও কর্মবিরতিতে ফিরে যাওয়া হবে। ২৩ ঘণ্টা কর্মবিরতিতে থাকলেও জরুরি বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে সীমিত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন, এ সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগীর ফাইল না দেওয়ার ঘটনায় চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজন পরিচয়ে এক তরুণ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এ হামলা চালায়। এতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। এদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল চিকিৎসকরা।