চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ
চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখার ক্যাশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর ক্যাশ অফিসার দীপংকর ঘোষকে (৩৮) প্রধান করে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।
এছাড়া, ব্যাংকটির ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. বাদলের নেতৃত্বে চার সদস্যের অডিট কমিটিও ঘটনাটি তদন্ত করছে।
অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে। তিনি ২০১৯ সালে অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখায় যোগদান করেন। অগ্রণী ব্যাংকে যোগদানের পর ছেংগারচর শাখাতেই তার প্রথম পদায়ন হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ অফিসার দীপংকর ঘোষ গত ২৯ আগস্ট নির্ধারিত সময়ে ব্যাংকে না আসায় তাকে ফোন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ সময় তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তাই আসতে দেরি হবে। তবে দীর্ঘক্ষণ পার হলেও ব্যাংকে না আসায় পুনরায় তাকে ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মুঠোফোনে কল করলে তার স্বামী ব্যাংকের উদ্দেশে ঢাকার বাসা বের হয়ে গেছেন বলে জানান।
এজাহারে আরও বলা হয়, যেহেতু ভল্টের চাবি দীপংকরের কাছে থাকতো এবং তিনি না আসায় ওইদিন (২৯ আগস্ট) আর ভোল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে সন্দেহজনক মনে হলে ৩০ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
শাখা ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'গত ২৮ আগস্ট পর্যন্ত দীপংকর অফিস করেছেন। এরপর থেকে তার কোনো হদিস নেই। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কিনা- যাচাইয়ের জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রির দ্বারা ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। এরপর গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। তবে ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। ফলে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।'
তিনি বলেন, 'শেষদিনও দীপংকরের আচরণ ও গতিবিধি স্বাভাবিক ছিল। ভল্টের চাবি তার কাছেই থাকত। যেহেতু তিনি ব্যাংকে আসছেন না, ধারণা করা হচ্ছে ভল্ট থেকে টাকা নিয়ে পালিয়েছেন তিনি। ব্যাংকের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন এবং পুলিশও ঘটনা তদন্ত করছে।'
মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, অগ্রণী ব্যাংকের টাকা চুরি যাওয়ার ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের করা মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত দীপংকরকে গ্রেপ্তার এবং টাকা উদ্ধারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।