বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৭ হাজার মাছের ঘের
বাগেরহাটে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিতে অন্তত সাত হাজার ঘের ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। এতে চাষীদের কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় চাষীদের সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গলদা চিংড়ি উৎপাদনে জেলার অন্যতম ফকিরহাট, চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার চাষীরা।
এছাড়াও মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার চাষীদের ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। চাষীদের দাবি- কয়েকশো কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে এই পানিতে।
ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা এলাকার কাজী মিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে গেছে। ঘেরের পাড়ের উপর হাঁটু পানি। নেট, কচুরিপানা ও ঘাষ দিয়ে মাছ ভেসে যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছি।
নুর মোহাম্মাদ নামের আরেক চাষী বলেন, আমার তিনটি ঘেরের প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
মোল্লাহাট উপজেলার কাহালপুর গ্রামের নাসির মিয়া বলেন, আমার ৫০ বিঘার তার দুটি ঘেরসহ আশপাশের সকলের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।
চিতলমারী উপজেলা সদরের চাষী মুমিনুল হক টুলু বলেন, ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করি আমরা। মাছ বের হয়ে যাওয়ায় আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে ফকিরহাট, চিতলমারী ও মোল্লাহাটের বিভিন্ন এলাকায় খেওলা জাল দিয়ে পানিতে ভেসে যাওয়া মাছ ধরতে দেখা যায় স্থানীয়দের।
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে না পারলেও ক্ষতিগ্রস্তদের চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল।
তিনি বলেন, প্রায় প্রতি বছরই বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে ঘেরের মাছ ভেসে যায়। আবার শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে মাছ মারা যায়। এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে ঘেরের গভীরতা ও পাড়ের উচ্চতা বৃদ্ধির করতে হবে। বৃষ্টির পানি নেমে গেল চুন দিয়ে পরিমাণ মতো খাবার দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।