সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হলো
বাংলাদেশ সেনাবহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ৬০ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হলো। এ সকল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে দায়িত্ব পালন করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব জেতী প্রু স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞোপনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেটের ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
ফৌজদারি কার্যবিধিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারেন। পাশাপাশি জরিমানা করা, জেল দেওয়াসহ বিভিন্ন বিচারকার্যও করতে পারেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনো সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ও খাতে বিশৃংখলা চলছে। আইনশৃংখলা বাহিনী হিসেবে পুলিশও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। বিভিন্ন খাতের কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। অনেকেক্ষেত্রে কর্মীরা জোর করে তাদের দাবিদাওয়া আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে জোর করে শিক্ষকদের পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে।
অনেক জায়গায় বিক্ষুদ্ধ জনগণ আটককৃত আসামিদের ওপর হামলা করছে। শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে কলকারখানা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করেছে। মাজার, মন্দির ভাংচুরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনাও ঘটছে।
এসব বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বারবার আহ্বান জানানো হলেও– তা বন্ধ হয়নি। এজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।