চট্টগ্রামে পুলিশি হেফাজতে কলেজ ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় ১৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
পুলিশ হেফাজতে কলেজ ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সরকারি সিটি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাজমুল হোসেনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর নাজমুলকে পুলিশ কর্মকর্তারা গুরুতর শারীরিক নির্যাতনের শিকার করেছেন বলে জানা গেছে, যার ফলে এই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে নাজমুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মো. জাকির হোসেন মামলাটি গ্রহণ করে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন।।
সিআইডিকে ২০ অক্টোবরের মধ্যে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আদালতের কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, কেন ভুক্তভোগী, তার পরিবার এবং বাদীকে সুরক্ষা দেওয়া হবে না– এই মর্মে আদালত পুলিশকে ১৪ দিনের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ১৪ কর্মকর্তা হলেন: দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী এবং কোতোয়ালী ও বাকলিয়া থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম ওবায়দুল হক ও আফতাব উদ্দিন, কোতয়ালী থানার টহল পরিদর্শক (ট্র্যাফিক) মো. মিজানুর রহমান, কোতোয়ালি ট্র্যাফিক জোনের কনস্টেবল মুন্সি শাহজাহান, কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান, রুবেল মজুমদার, রণেশ বড়ুয়া ও গৌতম, একই থানার কনস্টেবল কামাল ও বাকলিয়া থানার এসআই আব্দুস সালাম, মো. মিজান ও ওসির দেহরক্ষী কনস্টেবল মো. ইলিয়াস। এছাড়া মামলায় আরও ৭ থেকে ৮ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামী করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের শাহ আমানত ব্রিজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। নাজমুলকে সুস্থ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
অফিসাররা লোহার রড এবং কাঠ ব্যবহার করে তাকে মারধর করে এবং তাকে একটি চরমপন্থি গোষ্ঠীর সদস্য বলে অভিযুক্ত করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নির্যাতনের পর পুলিশ হেফাজতে ফেরার আগে নাজমুলকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরের দিন তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার আগে তিনি ১৪ দিন জেলে ছিলেন।
নাজমুলের আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আদালত বিষয়টির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ ধরনের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।"
তিনি বলেন "হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার ভাইয়ের সহ্য করা কথিত নির্যাতনের বিচার চাইছেন বাদী।"