আশুলিয়ায় আজও বন্ধ ৫৫ কারখানা
শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গতকালের মত আজ মঙ্গলবারও (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ৫৫টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এরমধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারায় ৪৬টি এবং ৯টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর বাইরে ডিইপিজেডসহ শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানাগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, সকালে অনেক কারখানার শ্রমিকরা কারখানাগুলোর সামনে গিয়েছিলেন, পরে কারখানা বন্ধ পেয়ে ফিরে এসেছেন।
শিল্প পুলিশ বলছে, উৎপাদন বন্ধ থাকা কারখানাগুলো মূলত আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে অবস্থিত। তবে ৫৫টি কারখানা বন্ধ থাকলেও এর সবগুলো কারখানায় যে সমস্যা রয়েছে, ব্যাপারটি এমন নয়। মূলত হাতে গোনা কিছু কারখানা থেকে শ্রমিক অসন্তোষের এই ঘটনাগুলোর সূত্রপাত হচ্ছে এবং ফলশ্রুতিতে ১০/১২টি কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে আশেপাশের কারখানাগুলোতেও এর প্রভাব পড়ছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, "শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্টসহ অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন করার কারণে আজ ৪৬টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এছাড়া আরও ৯টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।"
এছাড়া, যেসব কারখানা খোলা রয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ করে রেখেছেন বলেও জানা গেছে।
তবে শিল্পাঞ্চলের কোথাও আজ কোনো সড়ক অবরোধ কিংবা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা জোরদারে বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন থাকাসহ শিল্পাঞ্চলে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বিজিএমইএ বলছে, আশুলিয়ায় আজ ৩৫টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এর মধ্যে ২৯টি কারখানা বাংলাদেশ শ্রম আইন ১৩(১) ধারায় (নো ওয়ার্ক, নো পে) বন্ধ রয়েছে। কারখানা চালু রাখার পর কাজ বন্ধ আছে বা ছুটি আছে এমন কারখানার সংখ্যা ৬টি।
শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে- হামীম গ্রুপ, অনন্ত গ্রুপ, ডুকাটি অ্যাপারেলস, নাসা গ্রুপ, নিউএইজ গ্রুপ, ব্যান্ডো ডিজাইন, ইয়াগি বাংলাদেশ লিমিটেড, এনভয় গ্রুপ, ভিনটেজ গার্মেন্টস, জেনারেশন নেক্সট।
এছাড়া, কারখানা স্ব-বেতনে ছুটি আছে বা কাজ বন্ধ আছে কিংবা শ্রমিকরা চলে গেছেন এমন কারখানার মধ্যে রয়েছে- সিডকো গ্রুপ, দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেড, এফএনএফ ট্রেন্ড ফ্যাশন, ট্রাউজার্স লাইন লিমিটেড, ফ্যাশন ফোরাম লিমিটেড।
বিজিএমইএ আরও জানায়- আজ সাভার, আশুলিয়া, জিরানি এলাকায় ৪০৭টি কারখানা খোলা রয়েছে; এর বিপরীতে বন্ধ রয়েছে ৩৫টি। গাজীপুর এলাকায় খোলা রয়েছে ৮৭৬টি কারখানা এবং বন্ধ রয়েছে ৪টি।
নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ২০৯টি কারখানা খোলা রয়েছে, ডিএমপিতে ৩০২টি এবং চট্টগ্রাম এলাকায় ৩৫০টি কারখানা খোলা রয়েছে। এসব এলাকায় কোনো কারখানা বন্ধ নেই।
বিজিএমইএ জানায়, আশুলিয়া এলাকায় ২৬৭টি (৯৮.১৬ শতাংশ) কারখানা আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে এবং বেতন দিতে পারেনি ৫টি (১.৮৩ শতাংশ) কারখানা।