নোয়াখালী বসুরহাট সংঘর্ষ: মির্জা ও বাদলের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে এবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (দ্রুত বিচার) আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে, গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান বাদলের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকালে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান আরজুমান পারভীন ও ইকবাল হোসেনের মামলা দু'টি গ্রহণ করে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
মির্জার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে মামলা:
মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার লোকজন গত ৮মার্চ সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। এসময় হামলাকারীরা ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতংক তৈরি করে। এ ঘটনায় খিজির হায়াত খানের স্ত্রী আরজুমান পারভীন বাদী হয়ে আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান, মির্জার ভাই শাহাদাত হোসেনকে দ্বিতীয় ও ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাসিককে তৃতীয়সহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামী করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান মামলাটি গ্রহণ করে- আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে মেয়র মির্জার অনুসারীর আরও একটি মামলা:
মামলায় বাদী ইকবাল হোসেন উল্লেখ করেন গত ৮ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বসুরহাট রূপালী চত্বরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ তারা সরকার ঘোষিত ৪০ ঊর্দ্ধ নারী পুরুষদের কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধকরণ সভা করছিলেন। কিছুক্ষণ পর মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী কার্যালয়ে প্রবেশ করে মেয়র মির্জাকে বের হয়ে যেতে বলেন। এসময় তিনি (ইকবাল) বাধা দিলে বাদল তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে এবং তার লোকজন কার্যালয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরের ছবি ও অফিসের আসবাপত্র ভাঙচুর করে।
হামলাকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে নেতাকর্মীদের মারধর করে জখম করে এবং ককটেল, বোমা বিষ্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি করে মানুষদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় ৯ মার্চ কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ নিয়ে গেলে থানা পুলিশ মামলা বিলম্ব করে। এরপর মঙ্গলবার ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মিজানুর রহমান বাদলকে আসামী করে ১৯৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জনকে আসামী করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বাদলের জামিন না মঞ্জুর, আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ:
গ্রেপ্তারকৃত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে কঠোর পুলিশী পাহারায় মঙ্গলবার সকালে আমলী আদালত-২ এ হাজির করা হয়। এসময় বাদলের জামিনের জন্য আদালতে একটি আবেদন করা হয়। একই মামলায় গ্রেপ্তার অপর ৮ আসামীর ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান বাদলের জামিন আবেদন ও অপর ৮ আসামীর রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। একইসাথে, মিজানুর রহমান বাদলকে আরও ২টি মামলায় শোন- অ্যারেস্ট (সমন ছাড়া) দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।