ঢাকার দুই সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে বিতর্কিতকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না : ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে কোনো বিতর্কিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। দুই সিটিতেই মেয়র পদে বিজয়ী হতে পারে জনপ্রিয় এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিভিন্ন সংস্থা ও তার নিজস্ব টিম দিয়ে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জরিপ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করতে নির্বাচন কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহায়তা করা হবে। সরকার ও সরকারি দল সিটি নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে আশ্বস্ত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার সকালে ভোগরা-জয়দেবপুর-মদনপুর (ঢাকা-বাইপাস) সড়কের পিপিপির আওতায় নির্মাণাধীন ছয়লেন বিশিষ্ট এক্সপ্রেসওয় সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। মাঝখানে প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ কিছুটা মন্থর গতিতে চলে ছিল। অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। যে কারণে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হবে।
মন্ত্রী বলেন, চায়নার বেসরকারি কোম্পানি সিচুয়ান রোড এন্ড ব্রিজ গ্রুপ কর্পোরেশন লিমিটেড, শামীম এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড যৌথভাবে ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ কাজের জন্য। পিপিপির আওতায় ঢাকা বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে। প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ২২৩ কোটি টাকা অর্থমন্ত্রণালয় অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দিবে। বাকি টাকা পিপিপির আওতায় চুক্তিপত্র বদ্ধ বিদেশি দুইটি কোম্পানি বহন করবে । জমি অধিগ্রহণ ও সার্ভিস চার্জ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয় করবে। বাকি বাকি তিন হাজার ২৭৬ কোটি টাকা বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবেন। ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকা-বাইপাস সড়কের ৬ লেন বিশিষ্ট এক্সপ্রেস সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জীবিকার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। এজন্য তিনি সবাইকে সড়কে চলাচলের জন্য ট্রাফিক আইন মেনে চলা ও মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের হেলমেট ব্যবহারের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, উঠতি বয়সের তরুণরা ঢাকা ও সারাদেশে ট্রাফিক আইন মেনে চলে না। মহাসড়কগুলোতে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় নছিমন-করিমন-ভটভটি থ্রি হুইলার চলাচল করছে। তাদের ভোটের জন্য এ পরিবহণগুলো ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। এই পরিবহনগুলো সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে বিগত দিনে সড়ক দুর্ঘটনার হার কমলেও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার বেড়েছে। শুধুমাত্র ট্রাফিক আইন মেনে না চলার কারণে। তিনি সবাইকে সড়ক ব্যবহারে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী জাওয়াদ আলম, এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক সবুজ উদ্দিন খান, চীনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই লি জিমিংসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।