সাস্টের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘোষণা
বিগত দশদিন ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ বিকাল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
'সাস্টের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' ব্যানারে 'শিক্ষার দাবিতে, বাঁচার দাবিতে' সংহতি জানিয়ে সাস্টের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে খোলা ফেসবুকের ইভেন্ট পেজে তারা লিখেছেন, 'গত ১০দিন যাবত সাস্টে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান আছে। তাদের আন্দোলনের মৌলিক দাবি ছিলো খাদ্যের মান বৃদ্ধি, উন্নত ওয়াইফাই ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্ন ওয়াসরুম - সর্বোপরি হলের অব্যবস্থাপনা দূর করার দাবি নিয়েই আন্দোলনটি গড়ে উঠেছিলো। এই সমস্যাগুলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একার নয়, বরং দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একই দাবি নিয়ে বারবার আন্দোলন গড়ে তোলা হলেও, তার কোনোটিই পূরণ করা হয়নি,'
'আজ যখন আমাদের মত শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবিতে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরে আক্রান্ত হচ্ছে তখন আমরা আর চুপ থাকতে পারিনা। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সর্বাত্মক সংহতি প্রকাশ করছি।'
আয়োজকদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম শিহাব রেওয়াজ বলেন, 'সাস্টের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমাদের সবার-ই। ন্যায্য দাবি তোলায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই আজ হাসপাতালে। আমরা গতকালও সংহতি জানিয়ে নেমেছিলাম। আজ আরও বেশি মানুষ নিয়ে সংহতি জানাতে নামছি,"
আয়োজকদের আরেকজন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অরুণিমা তাহসিন লিখেছেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারী সকলকে সাস্টের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ও অফলাইনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান রইল। নিজেদের লাল নীল হলুদ সবুজ কমলা আসমানী সব রঙ উহ্য রেখে কাল শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক-একজন হিসেবে সংহতিতে যুক্ত হবেন,'
'পাশের মানুষটার দিকে তাকালে যেন তার রঙ আমরা না দেখে দেখতে পাই শুধুই একজন সমব্যাথী, সহমর্মি সহযোদ্ধা হিসেবে। দল মত নির্বিশেষে এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সংহতি হোক সাস্টের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে।'
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে নামেন শাবিপ্রবির ২৪ শিক্ষার্থী। এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। পরে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে দেওয়া উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, উপাচার্য তাদের দাবি না মেনে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা করেন। পরে সেই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা।