পিপিই ও খেলনা রপ্তানিতে ১৫৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে প্রাণ-আরএফএল
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, চিকিৎসা উপকরণ এবং খেলনা রপ্তানিতে ১৫৪ কোটি টাকার বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে- দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ প্রাণ-আরএফএল।
এ লক্ষ্যে আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গ্রুপটির অঙ্গ:প্রতিষ্ঠান বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল; আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত শিল্পাঞ্চলে কর রেয়াত সুবিধার আওতায় কারখানা স্থাপনে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
বেপজা সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৮৫০ টন পিপিই সরঞ্জাম যেমন; সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক, কেএন 95 মাস্ক, এন 95 মাস্ক, সার্জিকাল গ্লাভস, জুতো কভার, এমওপি ক্যাপস, মেডিকেল গাউন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বার্ষিকভাবে উৎপাদন করা যাবে।
এছাড়া, কারখানাটি বাৎসরিক ৪,৮৫৭টন খেলনা উৎপাদন করবে। এরমধ্যে থাকবে; খেলনা গাড়ি, শিক্ষামূলক খেলার উপকরণ, বর্ণমালা, শক্ত এবং নমনীয় খেলনা পশুপাখি ইত্যাদি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট শিল্পে; বেবি টয়, স্লিপার টয়, বিল্ডিং টয় নামে পরিচিত পণ্যগুলোও উৎপাদিত হবে। আরও বহুবিধ শিশু ক্রীড়া সামগ্রী ভবিষ্যতে প্রস্তুতের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে।
প্রাণ-আরএফএল এর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলি জানিয়েছে, এতে প্রায় ১,৯০০ জনের সরাসরি কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
বঙ্গ প্লাস্টিকের চেয়ারম্যান ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রথেন্দ্র নাথ পল বলেছেন, এটি তাদের বিদ্যমান কারখানার বাইরে সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী একটি বিনিয়োগ।
তিনি জানান, আগামী এক বছরের মধ্যেই নতুন কারখানায় উৎপাদন শুরু হতে পারে। প্রতিমাসে এখান থেকে ২০ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ১০ কোটি টাকার খেলনা রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
''এই পণ্যগুলি আমাদের বিদ্যমান কারখানায় স্থানীয় বাজারের জন্য তৈরি করা হয়। বর্তমানে আমরা ৩০ কোটি টাকার পিপিই এবং মাসিক ১০ কোটি টাকার খেলনা বিক্রি করছি। নতুন কারখানাটি চালু হওয়ার পরে এখানে রপ্তানি হিসাবে কিছু সংযোজন হবে,'' তিনি যোগ করেন।
কোভিড -১৯ মহামারি আকারে দেশে আঘাত হানার আগে থেকেই এ শিল্প গোষ্ঠীটি সার্জিক্যাল মাস্ক-সহ চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন করে আসছে। দেশে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর তারা উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়িয়েছে , তবে এতদিন আলোচিত পণ্যগুলো নিয়ে রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করেনি।
বাংলাদেশের আরেকটি শীর্ষস্থানীয় এবং বহুমুখী শিল্পগোষ্ঠী- জেএমআই গ্রুপ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম রফতানি শুরু করেছে।
তাছাড়া, বিশ্ব যতদিন অতিমারির কবলে থাকবে, ততদিন এসব পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার চাহিদাও থাকবে ব্যাপক। বর্তমানে বৈশ্বিক পিপিই পণ্যের বাজার পরিধি কয়েকশ' কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। অতিমারি শুরু হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই তৈরি হয় বিশাল এ চাহিদা।
এই সময়ে, বিশ্বজুড়ে পিপিই পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগণ্য দেশ হয়ে উঠেছে। কারণ, স্থানীয় পোশাক নির্মাতারা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছ থেকে পিপিই গাউন, মাস্ক, জুতো কাভার ইত্যাদি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্যাদেশ পাচ্ছেন।
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক উৎপাদক এবং রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিজিএমইএ সূত্র জানায়, বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে বর্তমানে দেশের আরও ৩৩টি কোম্পানি উৎপাদন করছে বা উৎপাদনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দেশের বৃহত্তম পোশাক প্রস্তুতকারক বেক্সিমকো গ্রুপ দেশীয় বাজার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডায় পিপিই রফতানি করেছে।
শিল্পটিতে প্রণোদনা দেয়ার লক্ষ্যে, ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সরকার সামগ্রিকভাবে পিপিই পণ্য ও তার কাঁচামাল তৈরিতে শুল্ক মওকুফ করেছে।
- মূল লেখা: Pran-RFL to invest Tk154 crore in PPE, toy exports
- অনুবাদ: নূর মাজিদ