মহামারির বছরে ২০,৫০০ কোটি কালো টাকা সাদা করার রেকর্ড
বিদায়ী অর্থবছরে ১১,৮৩৯ জন করদাতার প্রায় সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এর মধ্যে নগদ টাকা সাদা হয়েছে ১৬,৮৩০ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে একক অর্থবছরে এটি সর্বোচ্চ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাময়িক হিসাবে, ব্যাংক বা নগদে রাখা এই বিপুল পরিমাণ টাকা সাদা করেছেন ৭,০৫৫ জন করদাতা। বাকি টাকা জমি-ফ্ল্যাট, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হয়েছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজার, নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়। এছাড়া এলাকা ও আয়তনভেদে নির্ধারিত কর দিয়ে জমি-ফ্ল্যাটেও টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। আর সুযোগটি সবচেয়ে বেশি নিয়েছে গচ্ছিত টাকার ক্ষেত্রে। চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ীসহ সব পেশাজীবী মানুষই কালোটাকা সাদা করেছেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, জুন মাস শেষে প্রাথমিক হিসাবে ৪,৫১৮ জন করদাতা জমি ও ফ্ল্যাট কিনে টাকা সাদা করেছেন। আর শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগ করেছেন ২৮৬ জন করদাতা।
প্রায় সব সরকারের আমলেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো এ দেশের করদাতাদের সামনে এই ধরনের সুযোগ আসে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ১৫ বারের বেশি এ ধরনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তেমন একটা সাড়া মেলেনি।
এবার ঢালাও এবং কম কর হারে সুযোগ দেওয়ায় কালো টাকার মালিকেরা উৎসাহিত হয়েছেন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। করোনার কারণে সব যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় বিদেশে টাকা পাচারের সুযোগ সীমিত হয়েছে। সে কারণেও অনেকে অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা সাদা করে ফেলেছেন বলে মনে করছেন তারা।
অর্থনীতিবিদ ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, করোনার কারণে বিদেশে টাকা পাঠানো অনিরাপদ হয়ে উঠে। অন্যদিকে হুন্ডিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অবৈধ উপার্জনের টাকা ব্যাংকে রেখেছে মানুষ।