বিনা প্রশ্নে ১০% ট্যাক্সে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব
বিনা প্রশ্নে ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আবাসন খাতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে আনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের জন্য এ সুবিধা চাওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে সরকার কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে আসছে।
অবশ্য প্রতি বছর এমন দাবি না জানানোর আহবান জনিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম বলেন, এই দাবি মেনে নিলে কালো টাকা অনবরত তৈরি হতেই থাকবে।
তিনি বলেন, "এ ধরনের দাবি প্রতি বছর করাটা মানায় না। আপনারা পাঁচ বছরের জন্য এ সুবিধা চাচ্ছেন, তাহলে অর্থনীতিতে অনবরত কালো টাকা যুক্ত হতেই থাকবে; আর আপনারা বাড়ি কিনতে থাকবেন।"
ভিন্ন দিক থেকেও বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সরকার দীর্ঘ সময় ধরে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে আসলেও ২০২১-২২ অর্থবছরে মাত্র ১০ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আবাসনসহ যেকোনো খাতের কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়। শুধু তাই নয়, ওই টাকার উৎস সম্পর্কে ট্যাক্স বিভাগ তো নয়ই, অন্যকোনো বিভাগও প্রশ্ন তুলতে পারবে না বলে আইনি বিধান যুক্ত করা হয়। যার ফলে আলোচ্য অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ কালো টাকা সাদা হয়েছে।
তবে সমালোচনার মুখে এর পরের অর্থবছরে ওই সুবিধা বাতিল করে সরকার।
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহেল রানা এমন সুবিধার যুক্তি তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম গ্রহণের সুযোগ থাকায় দেশের প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে ফ্ল্যাট ক্রয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় না।
"এ সুযোগ দেওয়া হলে এসব বিনিয়োগকারী ভবিষ্যতে কর রেটের আওতায় চলে আসবে। এ সুবিধা দেওয়া হলে জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে," উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া, আবাসন খাতে রেজিস্ট্রেশন ফি বিদ্যমান ১২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা, এ খাতের সেকেন্ডারি মার্কেট শক্তিশালী করতে কর হার ৩.৫ শতাংশ করা, ভ্যাট এক তৃতীয়াংশে নামানো, জমির মালিকের উৎস কর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশ করাসহ আরো কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যাল ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানির ক্ষেত্রে অবচয় হার বাড়ানো, শুল্কায়নের সুনির্দিষ্ট কর আরোপের বিধান আনা, এসইউভি বা জিপ গাড়ির শুল্ক কমানো, ইলেক্ট্রিক ভেহিক্যালের সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি (এসডি) প্রত্যাহার করা, গণপরিবহনে ব্যবহার হওয়া মাইক্রোবসের বিদ্যমান ২০ এসডি প্রত্যাহার করা এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেয়।
আলোচনায় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ ৫টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন।