জমিতে অপ্রকাশিত অর্থ বিনিয়োগ করা যাবেনা
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ প্রতিস্থাপন করে রোববার (১৮ জুন) সংসদে 'আয়কর আইন, ২০২৩' পাস করা হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, জমিতে বিনিয়োগের জন্য অপ্রকাশিত অর্থ ব্যবহার করা যাবেনা। তবে শর্তসাপেক্ষে ফ্ল্যাটে বিনিয়োগের জন্য অপ্রকাশিত অর্থ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হবে।
গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা এবং দিলকুশার মতো এলাকায় ২০০ বর্গমিটারের বেশি বিল্ডিং স্পেস বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার বেলায় প্রতি বর্গমিটারের জন্য নির্দিষ্ট কর হার প্রস্তাবিত ৫,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬,০০০ টাকা হবে।
জেলা শহরের পৌরসভাগুলোতে নির্দিষ্ট করের পরিমাণ প্রস্তাবিত ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০০ টাকা হবে।
নতুন আইনে আরো একটি শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বছরের মাঝামাঝি সময়ে কর আরোপ বা বৃদ্ধি সংক্রান্ত নীতি ব্যতীত আইনের যেকোনো বিধান সংশোধন করতে পারবে।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং পেশাদারদের মতে, নতুন এই শর্তটি ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন আইনে বড় ধরনের কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, করদাতাদের কর রেয়াত পাওয়ার জন্য সিকিউরিটি হিসেবে গণনা করা হবে সঞ্চয়পত্রকে; এবং অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটিজের মতো এর ইন্টারেস্ট পেমেন্ট থেকে ৫% উৎস কর কর্তন করা হবে, যা ন্যূনতম কর হিসেবে বিবেচিত হবে। গত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের ওপর উৎস কর ছিল ১০ শতাংশ।
নতুন আইনে, ৩ কোটি টাকার কম টার্নওভারের কোম্পানিকে রিটার্নের সাথে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দ্বারা প্রত্যয়িত আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হবে না।
কিন্তু ৩ কোটি টাকার বেশি বার্ষিক টার্নওভার আছে এমন কোম্পানিকে আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হবে।
এছাড়া, বিদেশ ভ্রমণের জন্য বাধ্যতামূলক সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া থেকে অব্যাহতি পাবেন ব্যক্তিগত করদাতারা। তবে চিকিৎসা ও হজের মতো বিষয়ে এ নিয়ম কার্যকর হবেনা।
নতুন আইন অনুসারে, কোম্পানির কর্মচারীদের প্রণোদনা ভাতা একটি পূর্বশর্ত হিসেবে গণ্য হবে, যা কর্মচারীদের করযোগ্য আয়ের অধীন হবে।
এফডিআর-এ ১০ লাখ টাকার বেশি থাকলে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে এবং যে ব্যাংকে এফডিআর খোলা হয়েছে সেখানে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ জমা দিতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল বিলটি উত্থাপন করেন। কণ্ঠভোটে পাস হয় বিলটি।
ইংরেজি ভাষায় প্রণীত 'আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪' এর পরিবর্তে আয়কর বিল, ২০২৩ বাংলা ভাষায় আরো সমসাময়িক ও আধুনিক করে লেখা হয়েছে। এ বিধানের বিষয়বস্তু সহজ বাংলায় রূপান্তরিত করা হয়েছে।
করদাতাদের কর নির্ধারণে সহায়তা করতে নতুন একটি গাণিতিক সূত্রও চালু করা হয়েছে।
বর্তমানে, সরকার আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর অধীনে প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ করে।